
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের একজন ওয়ারেন বাফেট, যার সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু এই বিপুল সম্পদের মালিক হয়েও তার জীবনযাপন চমকপ্রদভাবে সরল। বাফেটের সাফল্যের পেছনে কেবল বিনিয়োগের বুদ্ধিমত্তা নয়, রয়েছে তার মিতব্যয়ী জীবনধারাও।
১৯৫৮ সালে মাত্র ৩১,৫০০ ডলারে কেনা একটি সাধারণ বাড়িতে এখনও বসবাস করছেন বাফেট। তার চুল কাটতে খরচ হয় মাত্র ১৮ ডলার, আর প্রাতঃরাশে ম্যাকডোনাল্ডস থেকে খরচ করেন গড়ে ৩.১৭ ডলার। অর্থের অভাব নয়, বরং নিজের পছন্দেই এই সরল জীবনধারা অনুসরণ করেন তিনি। যদিও তিনি ব্যক্তিগত জেট কিনেছেন ৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারে, তবুও দৈনন্দিন জীবনে সরলতা তার কাছে বেশি মূল্যবান।
বাজেট যদি সহজ হয়, মানা আরও সহজ
গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ আয় যত কম বা বেশি হোক না কেন, একটি সঠিক বাজেট অনুসরণ করলেই আর্থিক দিক থেকে উপকৃত হয়। বর্তমানে জনপ্রিয় বাজেট পদ্ধতিগুলো যেমন: জিরো-বেজড বাজেটিং, ৫০/৩০/২০ বাজেট কিংবা 'পে-ইউরসেল্ফ-ফার্স্ট' বাজেট — এগুলো সহজবোধ্য এবং বাস্তবায়নযোগ্য হওয়ায় অধিক কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। জটিল বাজেটের তুলনায় সরল বাজেট বেশি কার্যকর ও টেকসই।
বিনিয়োগেও সরলতা লাভজনক
ওয়ারেন বাফেটের বিনিয়োগ কৌশলও বেশ সরল। তিনি ৯০/১০ স্ট্র্যাটেজির পক্ষে — অর্থাৎ ৯০ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদী স্টক এবং ১০ শতাংশ স্বল্পমেয়াদী নিরাপদ সম্পদে বিনিয়োগ। এতে সময়, ঝুঁকি ও খরচ কম হয়, ফলে সহজেই লাভজনক হয় বিনিয়োগ।
মিনিমালিজম: সঞ্চয় ও বিনিয়োগের জন্য জায়গা করে দেয়
সরল জীবনযাপন বা মিনিমালিজম সবসময় খরচ কমানোর লক্ষ্যেই হয় না, তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা অর্থনৈতিকভাবে সহায়ক। ‘Becoming Minimalist’ নামক ওয়েবসাইটের মতে, সরল জীবনের মাধ্যমে আমরা ঋণ ও অপ্রয়োজনীয় আর্থিক দায়বদ্ধতা এড়াতে পারি। আর সেই সুযোগে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মতো প্রকৃত সম্পদ গঠনের পথে এগোনো সম্ভব হয়।
সারসংক্ষেপে, ওয়ারেন বাফেটের জীবনের এই ছোট ছোট সরল সিদ্ধান্তগুলোই আমাদের জন্য হতে পারে বড় একটি অনুপ্রেরণা। হয়তো উত্তর লুকিয়ে আছে একেবারেই সহজ একটা বার্তায়—অর্থনৈতিক সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হতে পারে সরলতা।
ইমরান