
ছবি: সংগৃহীত
নাসার বিজ্ঞানীরা ক্লান্তি নিয়ে নতুন এক তথ্য সামনে এনেছেন। তাদের দাবি, শরীরে ক্লান্তির একটি নীরব রূপ—‘সামাজিক জেট ল্যাগ’— এখন বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
নাসার ঘুম-বিশেষজ্ঞদের মতে, দৈনন্দিন রুটিন ও শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির অমিলই এই সমস্যার মূল। সাপ্তাহিক ছুটিতে দেরি করে ঘুমানো বা দেরিতে ওঠার ফলে শরীরের সার্কাডিয়ান ছন্দে ব্যাঘাত ঘটে। এতে মানুষ অলস বোধ করে, ক্লান্তি বাড়ে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে।
সামাজিক জেট ল্যাগ মূলত সেই অবস্থা, যখন ঘুম ও জাগরণের রুটিনের সঙ্গে শরীরের প্রাকৃতিক ঘড়ির সমন্বয় নষ্ট হয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি এমন এক জেট ল্যাগ যা বিমানে না চড়েও হয়।
নাসার ঘুমবিষয়ক গবেষক এরিন ফ্লিন-ইভান্স ও র্যাচেল জ্যানসেন জানিয়েছেন, মানুষের শরীর ২৪ ঘণ্টার একটি স্বাভাবিক ছন্দে চলে। যখন এই ছন্দে বিঘ্ন ঘটে, তখন মানসিক ও শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষ করে রাতজাগা অভ্যাস যাদের, তারা বেশি ক্ষতির মুখে পড়েন। তারা সাপ্তাহিক ছুটিতে দেরিতে ঘুমিয়ে ও দেরিতে উঠে এই ব্যাঘাতকে আরও বাড়িয়ে তোলেন।
নাসার গবেষণা বলছে, সামাজিক জেট ল্যাগ হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, ওজন বৃদ্ধি, উদ্বেগ ও বিষণ্নতার মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি মানসিক দক্ষতা ও প্রতিক্রিয়া ক্ষমতাও কমে যায়।
মহাকাশচারীদের ঘুম নিয়ে গবেষণার অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঘুম ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত আলোয় আসা, সঠিক ঘুম পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ঘুমের সময় নির্দিষ্ট রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন—কয়েক দিন ঘড়ির অ্যালার্ম ছাড়া ঘুমানোর চেষ্টা করুন। শরীর কখন স্বাভাবিকভাবে জেগে ওঠে, তা বুঝে নিজের ঘুমের সময় ঠিক করুন।
ঘুম থেকে ওঠার পরপরই প্রাকৃতিক আলোর সংস্পর্শে আসার কথাও বলা হয়েছে। সকালের আলো শরীরের ঘড়িকে সজাগ করে তোলে ও ক্লান্তি কমায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব