
ছবি: আহানা ইয়েলিন অর্পি
সৌন্দর্য শব্দটি এক বিস্তৃত অনুভবের নাম। একে কেবল বাহ্যিক রূপে সংজ্ঞায়িত করা যায় না। যুগে যুগে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা বদলেছে, কিন্তু একে কেন্দ্র করে মানুষের অনুসন্ধান থেমে থাকেনি। বর্তমান সময়ে সৌন্দর্য আর শুধু প্রসাধনীতে সীমাবদ্ধ নয়—এটি এখন স্বাস্থ্য, জীবনযাপন, মানসিক প্রশান্তি ও আত্মবিশ্বাসের একটি সমন্বিত রূপ।
আধুনিক গবেষণায় প্রমাণিত, সুস্থ দেহ ও মনই হলো প্রকৃত সৌন্দর্যের ভিত্তি। একঘেয়ে খাদ্যাভ্যাস, ঘুমের অভাব, এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরের যেমন ক্ষতি করে, তেমনি ত্বকের উজ্জ্বলতা, চোখের দীপ্তি ও চুলের স্বাস্থ্যেও সরাসরি প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে, পুষ্টিকর খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ব্যায়াম ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ত্বক ও চুলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখতে সহায়ক। একটি স্বাস্থ্যবান শরীর সবসময়ই এক ধরনের সৌন্দর্যের আভা বহন করে, যা কোনো সাজসজ্জায় পাওয়া যায় না।
আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো, সৌন্দর্য শুধু দেখার জিনিস নয়, অনুভবের বিষয়। একজন মানুষের মুখের হাসি, চোখের প্রশান্তি, আচরণের নম্রতা এবং নিজের প্রতি যত্নবান হওয়ার অভ্যাস—সবকিছু মিলে তৈরি করে এক পরিপূর্ণ সৌন্দর্য, যা দীর্ঘস্থায়ী এবং গভীরভাবে প্রশংসনীয়।
মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সৌন্দর্যের সম্পর্কও আজ প্রতিষ্ঠিত সত্য। যারা নিজেদের নিয়ে তৃপ্ত, যারা আত্মমর্যাদায় বিশ্বাসী এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন—তাদের মুখাবয়বে এক অনন্য দীপ্তি থাকে। এটি প্রসাধনীর জেল্লায় নয়, বরং ভেতরের প্রশান্তি থেকে উৎসারিত।
সৌন্দর্যের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—এটি একান্তই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। সামাজিক মিডিয়া কিংবা বিজ্ঞাপনের তৈরি সৌন্দর্যের আদর্শের সঙ্গে নিজের তুলনা করা অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর। বরং নিজেকে যত্ন নেওয়া, নিজের শরীর ও মনকে সম্মান করা এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়াই সত্যিকারের সৌন্দর্যচর্চা।
এখন সময় এসেছে সৌন্দর্য নিয়ে নতুনভাবে ভাবার। সৌন্দর্য যেন হয়ে ওঠে আরাম, পরিচর্যা ও নিজের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ। রূপচর্চা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা কৃত্রিমতা নয়, বরং স্বাভাবিকতা ও স্বাস্থ্যের অভিব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। সেই সৌন্দর্য সময়ের সঙ্গে নষ্ট হয় না, বরং বয়সের সঙ্গে আরও পরিপক্ব হয়ে ওঠে।
আলীম