
ছবিঃ সংগৃহীত
ভবিষ্যতে জার্মান ভিসা পেতে আরও কম সময় লাগবে। কারণ, আগামী ১ জুলাই ২০২৫ থেকে জার্মানি বিশ্বজুড়ে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে আপিল করার (রিমন্সট্রেশন) সুযোগ তুলে নিচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে আবেদনকারীরা আর দূতাবাসে গিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষা করে আপিল করার ঝামেলায় পড়বেন না।
এই ঘোষণা জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে ভারতের জন্য করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও দ্রুত করার লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগে যা ছিল, এখন যা হচ্ছে
আগে, কারো ভিসা প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি আদালতে না গিয়ে সরাসরি কনস্যুলেটে চিঠি লিখে আপিল করতে পারতেন। যদিও এটি আইনগত বাধ্যতামূলক ছিল না, তবুও অনেকেই এই প্রক্রিয়ার উপর ভরসা করতেন। কিন্তু অনেক সময় এটি ধীরগতির ছিল, মাসের পর মাস কেটে যেত এবং পরিষ্কার ব্যাখ্যাও মিলত না।
এখন, সেই প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে। যার মানে, কেউ যদি ভিসা না পান, তাহলে তিনি সরাসরি নতুন আবেদন করতে পারবেন বা চাইলে আইনি পথে যেতে পারবেন।
এই পরিবর্তনের পেছনে কী কারণ?
জার্মানি ২০২৩ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু দূতাবাসে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করেছিল। দেখা গেছে, এতে কাজের গতি বেড়েছে, কর্মীদের সময় বাঁচছে এবং অপেক্ষার সময় কমেছে।
২০২৪ সালে জার্মানি প্রায় ২০৭,০০০ শেনজেন ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে — যা মোট আবেদন সংখ্যার ১৩.৭%। অনেকেই রিমন্সট্রেশনে গিয়ে সাড়া না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। তাই এই পুরনো পদ্ধতিকে সরিয়ে আরও সরল ব্যবস্থা আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নতুন করে আবেদন করা যাবে
যারা ভিসা পাননি, তারা চাইলে আবার আবেদন করতে পারবেন। আগে আবেদন করা, প্রত্যাখ্যান হওয়া – এগুলোর কোনটাই নতুন আবেদন করার পথে বাধা হবে না।
অনলাইন আবেদন ও দ্রুত অ্যাপয়েন্টমেন্ট
২০২৫ সালের শুরু থেকেই জার্মানি অনলাইনে জাতীয় ভিসার আবেদন গ্রহণ করছে। এর আওতায় পড়েন শিক্ষার্থী, দক্ষ কর্মী, পরিবারে যোগ দিতে চাওয়া সদস্যরা এবং প্রশিক্ষণার্থীরা। নতুন ডিজিটাল পোর্টাল ব্যবহার করে ধাপে ধাপে গাইডলাইন অনুযায়ী ফর্ম পূরণ ও কাগজ জমা দেওয়া যায়।
সবচেয়ে বড় স্বস্তির খবর – ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার জন্য আগের মতো ৮-৯ মাস অপেক্ষা করতে হবে না। এখন কয়েক দিনের মধ্যেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট মিলতে পারে।
যাদের জন্য উপকারী হবে
এই পরিবর্তন শিক্ষার্থী, চাকরিপ্রার্থী এবং পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়া অনেকের জন্য দারুণ খবর। আগের জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রিতা কেটে গিয়ে এখন অপেক্ষা কমবে, ভিসা সিদ্ধান্ত আসবে দ্রুত, আর প্রক্রিয়াটা হবে অনেক সহজ।
ভিসা প্রত্যাখ্যান হলেও হতাশ হওয়ার কিছু নেই। আপিলের জায়গায় এখন আপনি নতুন করে আবেদন করতে পারবেন – আরও সহজ, আরও দ্রুত।
মারিয়া