
কত রাতই তো ছাদে তাকিয়ে ভেবেছেন'এবার হয়তো ঘুম আসবে!' কিন্তু ঘুম যেন উধাও। আপনি জানেন কি, সেই কাঙ্ক্ষিত ঘুমটা লুকিয়ে আছে আপনার রান্নাঘরেই? হ্যাঁ, কিছু খাবারে এমন প্রাকৃতিক উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্ক ও শরীরকে শান্ত করে দেয়। এতে করে ঘুম আসে সহজে, গভীর হয় ঘুমের মানও। এবার ঘুমের ওষুধ নয়, বরং ঘুম-ডাকা খাবার দিয়েই রাত কাটান শান্তিতে।
চলুন জেনে নিই এমন ৮টি খাবারের কথা, যেগুলো রাতে খেলে ঘুম হবে শান্ত আর দীর্ঘস্থায়ী।
১. বাদাম (Almonds): ঘুম-ডাকার ম্যাজিশিয়ান!
বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, যা স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করে ও পেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। এতে থাকা প্রাকৃতিক মেলাটোনিন শরীরের ঘুম-জাগরণ চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। রাতে ঘুমের আগে এক মুঠো বাদাম খেলে ঘুম আসতে সময় লাগে না।
২. ভাত: পেটও ভরে, ঘুমও ধরে!
ভাতে থাকা কার্বোহাইড্রেট শরীরে ট্রিপটোফ্যান উৎপন্নে সাহায্য করে, যা পরবর্তীতে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিনে রূপান্তরিত হয়। এতে শরীর হয় শান্ত, মনও হয় নিস্তব্ধ। ঘুমের কয়েক ঘণ্টা আগে একটু ভাত আর সবজি-সুপ খেয়ে দেখুন, ঘুম কীভাবে আসে!
৩. গরম দুধ: দুধেই লুকিয়ে আরাম!
গরম দুধ ঘুমে সহায়তা করে কারণ এতে থাকে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন উৎপাদনের উপাদান। চাইলে দুধে সামান্য দারুচিনি, জাফরান বা জয়ফল মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে ঘুম আসে আরও মধুরভাবে। ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম-এর উপস্থিতি ঘুম গভীর করতে সাহায্য করে।
৪. কিউই: ছোট ফল, বড় উপকার
কিউইতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং সেরোটোনিন, যা ঘুমের গুণমান উন্নত করে। প্রতিদিন রাতে এক বা দুইটি কিউই খেলে ঘুম আসা সহজ হয়। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন C ও E শরীরকে রাখে চাপমুক্ত।
৫. চর্বিযুক্ত মাছ: ঘুম আর হার্ট দুটোই সুরক্ষিত
স্যালমন, সার্ডিন, ম্যাকেরেল জাতীয় মাছে থাকে ভিটামিন D ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন বাড়িয়ে ঘুমকে প্রাকৃতিকভাবে বাড়ায়। এছাড়া এগুলো ইনফ্লেমেশন কমিয়ে শরীরকে শান্ত রাখে।
৬. চেরি: স্বাদেও ভালো, ঘুমেও দারুণ
চেরিতে রয়েছে প্রাকৃতিক মেলাটোনিন, যা ঘুম-চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ঘুমের আগে এক মুঠো চেরি বা টার্ট চেরি জুস পান করলে সহজেই ঘুম আসে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহকে রাখে চাপমুক্ত।
৭. চ্যামোমিল চা: এক কাপেই শান্তির নিঃশ্বাস
চ্যামোমিল চায়ের রয়েছে অ্যান্টি-অ্যাংজাইটি গুণাগুণ, যা শরীর ও মস্তিষ্ককে শান্ত করে ঘুমের প্রস্তুতি নেয়। চাইলে এতে দারুচিনি মিশিয়ে নিতে পারেন, ঘুম আরও গভীর হবে।
৮. কলা: সস্তা, সহজ আর ঘুম-সহায়ক
কলায় থাকে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ট্রিপটোফ্যান, যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন উৎপন্ন করে। রাতে একটি কলা খেলে শরীরের পেশি শিথিল হয় ও স্ট্রেস কমে যায়।
কুমড়োর বিচি-ও ঘুমে সহায়ক। এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ট্রিপটোফ্যান ও জিঙ্ক ঘুম-সহায়ক হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে।
ঘুমের সমস্যা মানেই ওষুধ নয়। প্রতিদিনের খাবারেই লুকিয়ে আছে সেই শান্তির ঘুম। শুধু বুঝে খেতে হবে, পেট শান্ত থাকলে মনও শান্ত হবে। আর তখনই ঘুম আসবে আপনাআপনি, মেঘের মতো নরম আর গভীর।
সূত্র:https://tinyurl.com/55np4rma
আফরোজা