ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত তথ্য ১৪০০ বছর আগেই জানিয়েছে কোরআন

প্রকাশিত: ০৭:৪৮, ২২ মে ২০২৫

বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত তথ্য ১৪০০ বছর আগেই জানিয়েছে কোরআন

ছবি: প্রতীকী

মিশরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও রহস্যময়তা ঘিরে যুগ যুগ ধরে গবেষণা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। গিজার পিরামিড আর নীলনদএই দুটি নাম যেন মিশরের প্রতীক। আজ থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে নির্মিত গিজার পিরামিডগুলোর একদম পাশ দিয়েই নাকি একসময় বয়ে যেত নীলনদের একটি বিশাল শাখা। সম্প্রতি এই ঐতিহাসিক তথ্যই উঠে এসেছে একটি গবেষণায়, আর যা জানলে অবাক না হয়ে পারা যায় না।

সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলোএই তথ্যের ইঙ্গিত ১৪০০ বছর আগেই দেওয়া হয়েছে পবিত্র কোরআনে। সূরা যুখরুফের ৫১ নম্বর আয়াতের এরশাদ হচ্ছে,

‘ফেরাউন তার সম্প্রদায়কে ডেকে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! আমি কি মিশরের অধিপতি নই? এই নদীগুলো কি আমার নিম্নদেশে প্রবাহিত হয় না? তোমরা কি দেখছো না?’ (সূরা যুখরুফ, আয়াত ৫১)।

এই আয়াতের ‘আনহার’ শব্দটির অর্থ বহু নদী, যা বোঝায়ফেরাউনের সাম্রাজ্য নদনদীর মাঝেই বিস্তৃত ছিল।

কী বলছে আধুনিক গবেষণা?

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনা উইলমিংটনের ভূবিজ্ঞানী ড. ইমান ঘনেইম ও তার সহকর্মীরা উপগ্রহচিত্র ও ডিজিটাল এলিভেশন মডেল বিশ্লেষণ করে গিজা পিরামিডের পাশ দিয়ে প্রবাহিত একটি শুকিয়ে যাওয়া নদের শাখার অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। তারা এই শাখাটির নাম দিয়েছেন আহরামাত ব্রাঞ্চ (যার অর্থপিরামিড শাখা)।

এই শাখাটি ছিল প্রায় ৪০ মাইল দীর্ঘ এবং কোথাও কোথাও আধা মাইল চওড়া। গড় গভীরতা ছিল ৮০ ফুটেরও বেশি। গবেষণায় উঠে এসেছে, খ্রিষ্টপূর্ব ২৭০০ থেকে ১৮০০ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত ৩১টি পিরামিড ছড়িয়ে রয়েছে এই নদের তীর ঘেঁষে, যার মধ্যে গিজার তিনটি বিখ্যাত পিরামিডও রয়েছে।

ঘনেইম জানান, এই শুকিয়ে যাওয়া নদীটি এক সময় প্রাচীন মিশরের “সুপার হাইওয়ে ছিল। এই পথেই পাথর, শ্রমিক ও অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী নৌকায় করে আনা নেওয়া হতো। ফলে এটি শুধু নদীই নয়, ছিল ফেরাউনের ক্ষমতার অন্যতম উৎস ও প্রতীক।

একসময় জলাবদ্ধতা ও বন্যা ছিল স্বাভাবিক

গবেষণায় আরও জানা যায়, গিজার পিরামিড এলাকায় এক সময় পানির স্তর ছিল এতটাই উঁচু যে, পুরো অঞ্চলটি ছিল কর্দমাক্ত ও জলাবদ্ধ। মাঝে মাঝে ভয়াবহ বন্যাও দেখা দিত। অথচ বর্তমানে পিরামিডের চারপাশ জুড়ে রয়েছে ধু ধু মরুভূমি, যা নীলনদের সবুজ তীর থেকে অনেক দূরে।

কোরআনের সঙ্গে সামঞ্জস্য

গবেষকদের এই আবিষ্কার পবিত্র কোরআনের উক্ত আয়াতের সঙ্গে দারুণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে, কোরআন কোনো বিজ্ঞানের বই নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত এক মহাসত্য। তা সত্ত্বেও এতে এমন সব ঐতিহাসিক ও প্রাকৃতিক বাস্তবতা বর্ণিত হয়েছে, যেগুলোর বৈজ্ঞানিক সত্যতা শত শত বছর পর আবিষ্কৃত হয়েছে।

গিজা পিরামিডের নিচ দিয়ে নদীর প্রবাহ আর ফেরাউনের সেই দাবির মিল দেখে অনেকেই বলছেনএটা নিছক কাকতালীয় নয়, বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে এক স্পষ্ট নিদর্শন। প্রাচীন ইতিহাস আর আধুনিক বিজ্ঞান মিলে যেন আরেকবার সত্য প্রমাণ করে দিল পবিত্র কোরআনের অমোঘ বাণী।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=yx4sPHS9zwU

রাকিব

×