
ছবি: সংগৃহীত
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা ও সিটি কর্পোরেশন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তকে কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, দেশের স্থানীয় প্রশাসন কাঠামো সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে, এবং এটি সরকারের নীতিগত ভুল সিদ্ধান্তের ফল।
ইশরাক হোসেনের বক্তব্য এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উপদেষ্টা আসিফের ভূমিকা ঘিরে বিএনপি নেতাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে আন্দোলনটি বিএনপির প্রভাবাধীন হয়ে পড়েছে কিনা। উপস্থাপক উল্লেখ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ বিষয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন এবং ঢাকায় বর্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেবে বলেও হুমকি এসেছে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে এমন এক সময়ে বাস করছি, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালেও পঞ্চায়েত চেয়ারম্যান-মেম্বার ছিল, কিন্তু এখন সেই কাঠামো ভেঙে পড়েছে।”
তিনি দাবি করেন, তিনি আগে থেকেই বলে আসছিলেন—যেসব পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনে বিএনপি-জামাত বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন, তাদেরকে অন্তর্বর্তী প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হোক। তার মতে, ইউনিয়ন পরিষদ বাদে অন্যান্য স্থানীয় সরকার ইউনিটগুলো বাতিল করে দেওয়া হলেও ইউনিয়ন পরিষদগুলো এখনো চালু রয়েছে, যেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই দায়িত্বে আছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন:“এই ইউনিয়ন পরিষদগুলো বর্তমানে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ও ঠিকাদারদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ঠিকাদারদের একটি চক্র ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে পুরনো আওয়ামী ঘরানার ঠিকাদাররাই আধিপত্য বিস্তার করছে।”
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, “বিকল্প না ভেবে স্থানীয় প্রশাসনের সব ইউনিট ভেঙে ফেলা হয়েছে, যার ফলে সারাদেশে চরম সেবা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।” তিনি জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট নবায়ন, এমনকি স্কুলে ভর্তি পর্যন্ত জনসাধারণ ভোগান্তির মধ্যে আছে বলে মন্তব্য করেন।
“আপনি আমলা বসিয়েছেন, যারা আওয়ামী লীগের সময় দালালি করেছে, রাতের ভোট করেছে। তাদের তালিকা এসেছে, তাদের কেউ বরখাস্ত হয়নি, শাস্তি হয়নি।”
তিনি জানান, সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী হাসান আরিফের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে এই সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যেখানে মন্ত্রী তার দাবির সঙ্গে একমত হয়েছিলেন।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, "বিএনপির মহাসচিব এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে যেসব পৌরসভায় বিএনপির নির্বাচিত মেয়র রয়েছেন, তাদের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে আমি নিজেও দাবি করেছি অন্তত ১৭০০ কাউন্সিলরকে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব দিন। তাতে ন্যূনতম সেবা নিশ্চিত হবে।”
তিনি বলেন, শুধুমাত্র দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বা কোনো একটি ইউনিট নয়, দেশের টোটাল স্থানীয় প্রশাসন কাঠামো পুনর্গঠন করা দরকার। এক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে সেবা সংকট আরও প্রকট হবে।
আঁখি