
৩০ বছর বয়সের পর থেকে মস্তিষ্ক আরও পরিণত হতে শুরু করে। বলা যেতে পারে, এই সময় দীর্ঘকালীন সুস্থতার জন্য মস্তিষ্কে বিভিন্ন পরিবর্তন সাধিত হয়। তাই ৩০ বছরের পর থেকে মস্তিষ্কের যত্ন নিতে নিত্য দিনের জীবনে কিছু সহজ পরিবর্তন করা যেতে পারে।
৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে আমাদের বহু সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কারও ক্ষেত্রে সাংসারিক জীবন শুরু হয়। এরই পাশাপাশি থাকে কর্মজীবনের চাপ। সব মিলিয়ে এই ১০টি বছরে মস্তিষ্কের উপরে অনেকটাই চাপ পড়তে পারে। বুদ্ধিতে শান দিতে কয়েকটি পদ্ধতি পরখ করে দেখতে পারেন—
১) ডায়েট: চিকিৎসকদের মতে, মস্তিষ্ককে সক্ষম রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ডি, ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপাদানের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আধুনিক খাদ্যাভাসের কারণে অনেক সময়েই মস্তিষ্ক তার প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না। এর ফলে হাইপার টেনশন, প্রায়শই তথ্য ভুলে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ৩০ বছরের পর ডায়েটের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা উচিত।
২) ডিটক্স: এই সময়ে কর্মজীবনের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত মোবাইল থেকে বাড়তি তথ্য মস্তিষ্কে জমা হতে থাকে, যার প্রভাব পড়ে বুদ্ধিতে। অনেক সময়েই কাজ করতে গিয়ে ক্লান্তি বোধ হতে পারে। তাই প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম কমানো উচিত। এর ফলে মাথার উপরে চাপ কম পড়ে।
৩) ফিটনেস: মস্তিষ্ককে সতেজ এবং কর্মক্ষম রাখতে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য জরুরি। পাশাপাশি এই সময়ে এই সময়টা প্রজননের পক্ষে আদর্শ। দেহে অবিরত হরমোনের তারতম্য শুরু হয়। এ ছাড়াও মহিলাদের এই সময়ে পেরিমোনোপজ়ের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হতে হয়, যা তাঁদের মনের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যেতে পারে। এই সময় নিয়মিত শরীরচর্চা বা যোগাভ্যাস করতে পারলে দেহের হরমোনের সমতা বজায় থাকে। শরীরচর্চা মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
৪) ঘুম: ৩০ বছরের পর থেকে দৈনন্দিন ব্যস্ততা বাড়তে থাকে। মস্তিষ্ক কম্পিউটারের মতোই কাজ করে। সারা দিনের পর তারও বিরতি এবং রিস্টার্টের প্রয়োজন হয়। মস্তিষ্ককে নতুন উদ্যমে কাজ করতে সাহায্য করে ঘুম। অথচ কর্মব্যস্ততায় এই ১০ বছরে আমাদের ঘুমের পরিমাণ কমে আসে। মস্তিস্ককে ডিটক্স করতে প্রতি দিন সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন।
৫) স্বাস্থ্য পরীক্ষা: কাজের চাপে অনেক সময়েই আমরা শরীরের প্রতি মনোযোগ দিই না। কিন্তু ৩০ থেকে ৪০ পর্যন্ত জীবনকালে সবথেকে বেশি ধকল আমাদের সহ্য করতে হয়। অথচ সতর্ক না হলে, বয়সকালে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তার প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কের উপরে। তাই সুস্থ থাকতে এই সময়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। বছরে এক বার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, থাইরয়েড এবং দাঁতের পরীক্ষা করানো উচিত। মহিলাদের ক্ষেত্রে নিয়ম করে কোনও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
সজিব