
ছবি: সংগৃহীত।
সুস্থ ও স্থিতিশীল দাম্পত্য জীবন গড়ে তুলতে প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান, ভালোবাসা ও বোঝাপড়া। তবে আধুনিক জীবনের চাপ, ব্যস্ততা ও প্রযুক্তির আসক্তির কারণে অনেক সময় সম্পর্ক হয়ে পড়ে ক্লান্তিকর ও একঘেয়ে। সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে, দাম্পত্য জীবন সুন্দর রাখতে চাই সচেতন কিছু অভ্যাস, যা প্রতিদিনের জীবনে খুব সহজেই রপ্ত করা যায়।
সম্পর্কবিষয়ক গবেষণা ও মনোবিদদের মত অনুযায়ী, নিচে তুলে ধরা হলো এমন কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর অভ্যাস যা প্রতিদিন চর্চা করলে দাম্পত্য জীবন হতে পারে আরও সুখী ও দীর্ঘস্থায়ী:
১. সকালের শুভেচ্ছা ও রাতের শুভরাত্রি।
দিনের শুরু ও শেষ একটি ছোট শুভেচ্ছায় হলেও করতে পারেন। “শুভ সকাল” বা “শুভরাত্রি” বলার মধ্য দিয়ে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ সহজ হয়।
২. দৈনন্দিন ছোট কথোপকথন।
প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ মিনিট শুধু একে অপরের সঙ্গে সময় কাটানো-দিন কেমন গেল, কী ভালো লাগল বা কষ্ট পেয়েছেন কিনা, এসব নিয়ে আলাপ করা সম্পর্ককে আরও গভীর করে।
৩. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ।
সঙ্গীর ছোট ছোট কাজের জন্য “ধন্যবাদ” বলা বা তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ভালোবাসার গভীরতা বাড়ায়। এটা বোঝায়, আপনি তাকে এবং তার কাজকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
৪. প্রযুক্তি থেকে দূরে কিছু সময়।
দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় (যেমন রাতের খাবারের পর) দুজনে মিলে প্রযুক্তিমুক্ত সময় কাটানো-যেখানে শুধু কথা হবে, হাসি হবে, থাকবে মনোযোগপূর্ণ উপস্থিতি।
৫. একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া।
সপ্তাহে অন্তত কয়েকদিন একসঙ্গে বসে খাওয়া দাম্পত্যে বন্ধন দৃঢ় করে। একসঙ্গে রান্না করাও হতে পারে এক মধুর অভিজ্ঞতা।
৬. গঠনমূলক সমালোচনা ও ক্ষমা।
সমস্যা হলে একে অপরকে দোষারোপ না করে গঠনমূলক আলোচনা করা এবং ক্ষমা চাওয়ার ও ক্ষমা করার মানসিকতা দাম্পত্য সম্পর্ককে শক্তিশালী করে।
৭. ছোঁয়া ও স্নেহ প্রকাশ।
স্পর্শ, আলিঙ্গন বা একটি চুমু-এই ছোট ছোট অনুভবের প্রকাশ গভীর মানসিক বন্ধন তৈরি করে। এটি মানসিক স্বস্তিও বাড়ায়।
৮. একসঙ্গে পরিকল্পনা করা।
ভবিষ্যতের ছোট বা বড় পরিকল্পনা-ছুটি কাটানো, সঞ্চয়, সন্তান লালনপালন-এগুলোতে একসঙ্গে অংশগ্রহণ করলে সম্পর্ক হয় অংশীদারিত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেম বা দাম্পত্যে সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে ‘মানসিক উপস্থিতি’। অনেকেই এক ছাদের নিচে থেকেও দূরে থাকেন-কারণ তারা সঙ্গীর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ছোট ছোট অভ্যাসেই সেই আগ্রহ ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
দাম্পত্য সম্পর্ক শুধুই দায়িত্ব নয়, এটি ভালোবাসা ও অংশীদারিত্বের সুন্দর বন্ধন। প্রতিদিনের এই ছোট অভ্যাসগুলো নিয়মিত চর্চা করলে তৈরি হতে পারে এক পরিপূর্ণ, নির্ভরযোগ্য ও সুখী দাম্পত্য জীবন।
মিরাজ খান