ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

আল আকসা ছিনিয়ে নেয়ার ইসরাইলি পরিকল্পনা ফাঁস

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ৫ আগস্ট ২০২৫

আল আকসা ছিনিয়ে নেয়ার ইসরাইলি পরিকল্পনা ফাঁস

ছবি: সংগৃহীত

এতদিন প্রতিরোধ যোদ্ধাদের অজুহাত দেখিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করছিল দখলদার ইসরাইল। এবার সেই চেষ্টাকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়ে সরাসরি মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল আকসা মসজিদ দখলের ষড়যন্ত্র ফাঁস করে দিয়েছে নেতানিয়াহু সরকারের শীর্ষ মন্ত্রীরা।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাজ সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, পশ্চিম তীর এবং আল আকসা পুরোপুরি দখল করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। একইসাথে জেরুজালেমে সম্পূর্ণ ইসরাইলি আধিপত্য কায়েমের কূটকৌশলও প্রকাশ্যে আনেন তিনি।

এই ঘোষণার পর তিশা বাভের দিন, ধর্মীয় নিষেধ অমান্য করে, আল আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে প্রার্থনা করেন ইসরাইলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভীর। এ ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সৌদি আরব। রিয়াদ থেকে প্রকাশিত আরব নিউজের খবরে বলা হয়, “আল আকসা মসজিদে ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বারবার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড মসজিদের পবিত্রতা এবং মুসলিম বিশ্বের আবেগে চরম আঘাত হানছে।”

টাইমস অব ইসরাইল-এর খবরে বলা হয়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাজ তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) বার্তায় দাবি করেন, “দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংসের ২০০০ বছর পর তিশা বাভের দিনে পশ্চিম দেওয়াল এবং আল আকসা আবারো ইসরাইলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এসেছে।” এই বার্তার মাধ্যমে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, জেরুজালেমের পবিত্র স্থানগুলোর ওপর ইসরাইলের আধিপত্য আরও জোরদার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, আল আকসার বর্তমান প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা মুসলিম দেশ জর্ডান—যারা একটি দীর্ঘস্থায়ী ওয়াকফ চুক্তির মাধ্যমে এই মসজিদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে—তারা বলছে, ঐ চুক্তি অনুযায়ী, মসজিদ প্রাঙ্গণে মুসলমান ছাড়া অন্য ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করতে পারেন না। তবে চুক্তির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ইহুদিরা সেখানে প্রবেশ করছে, যার ফলেই প্রায়ই সহিংসতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় চলমান আগ্রাসনের ছায়ায় এখন ইসরাইল এককভাবে আল আকসা ও পশ্চিম প্রাচীরে আধিপত্য বিস্তারের দিকে এগোচ্ছে। চরম ডানপন্থী ইহুদি গোষ্ঠীগুলো এই পবিত্র অঞ্চল দখলের ষড়যন্ত্রে সরাসরি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে শুধু ফিলিস্তিন নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বাড়ছে।

সৌদি আরব সতর্ক করে বলেছে, “এই ধরনের কর্মকাণ্ড গোটা অঞ্চলে সহিংসতা ও অস্থিরতা বাড়িয়ে দেবে, যা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।”
বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় ও আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন আল আকসার দিকে—এবারের উত্তেজনার পরিণতি যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তা বলছে ইতিহাস ও বাস্তবতা।


শেখ ফরিদ

×