
ছবি: সংগৃহীত
গাজার মাটিতে যেন থামছে না দখলদার বাহিনীর নৃশংসতা। আগ্রাসনের তাণ্ডবে শহরজুড়ে যেখানে ধ্বংসস্তূপ আর ধোঁয়া—সেখানেই দাঁড়িয়ে এক মুক্তিকামী যুবক গর্ব ভরে উড়াচ্ছেন ফিলিস্তিনের পতাকা।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ ইতোমধ্যেই গাজা উপত্যকার প্রায় ৯০ শতাংশ অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, তবুও থেমে নেই তাদের সামরিক অভিযান। বরং তা আরও তীব্র করার ঘোষণা এসেছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছ থেকে।
সোমবার, সামরিক অভিযানের গতি বাড়িয়ে পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন নেতানিয়াহু। ইসরাইলি গণমাধ্যম ‘চ্যানেল ১২’ জানায়, এই বছরের মধ্যেই পুরো গাজা উপত্যকা দখলে নেওয়ার ছক এঁকেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী।
এই লক্ষ্য পূরণে তিনি শুধু প্রকাশ্যেই নয়, তেল আবিবের শীর্ষ রাজনৈতিক মহলেও গোপনে প্রচারণা চালাচ্ছেন। মঙ্গলবার ইসরাইলি আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে, যেখানে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে দখলকৃত অঞ্চলে সামরিক শাসন জারির প্রস্তাব দিয়েছেন দুই কট্টরপন্থী ইহুদি নেতা—ইতেমার বেনগাভীর ও বেজালালস মুশরিক। তবে এ পরিকল্পনার বিরোধিতা করায় আইডিএফ প্রধান ইয়ামাল জামির-কে বরখাস্তের হুমকি দেওয়া হয়েছে, যা ইসরাইলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকটকেও সামনে নিয়ে এসেছে।
নেতানিয়াহুর এই একচেটিয়া আগ্রাসন ঠেকাতে সাবেক আইনপ্রণেতাদের মতামত কিংবা মার্কিন প্রশাসনের যুদ্ধবিরতির আহ্বান—কোনো কিছুকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না তিনি। গোপনে চালিয়ে যাচ্ছেন দখল পরিকল্পনা।
এই পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের ভবিষ্যৎ আরও বেশি অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। গাজার ২২ লাখ অধিবাসী এখন এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। একদিকে দখলদার সেনাবাহিনীর আগ্রাসন, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা—এই দ্বিমুখী চাপের মাঝেও তাদের প্রতিরোধ থেমে নেই।
একদিকে বারুদের গন্ধ, অন্যদিকে রক্তাক্ত ধ্বংসস্তূপ—তারই মাঝে আজও পতপত করে উড়ছে ফিলিস্তিনের লাল-সবুজ-কালো পতাকা। সেটিই যেন বিশ্বের চোখে বারবার বলে দিচ্ছে—এই ভূমি এখনো হেরে যায়নি।