
শরীরে প্রাকৃতিকভাবেই শরীরে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। এটি পুরিন (purine) নামক পদার্থ ভেঙে তৈরি হয়। এই পুরিন আমরা বিভিন্ন খাবার থেকেও পাই। যেমন – মাংস, মাছ, ডাল, মাশরুম ইত্যাদি। সাধারণত, ইউরিক অ্যাসিড রক্তের মাধ্যমে কিডনিতে পৌঁছয় আবার প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
কখনও কখনও অতিরিক্ত পরিমাণে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হলে তা কিডনি ঠিকমতো তা বের করে দিতে না। সেই অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জমতে থাকে রক্তে। একেই বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া (Hyperuricemia)। যার আপাত দৃষ্টিতে অনেক সময় উপসর্গহীন হলেও নীরবে ঘাতক সমস্যা তৈরি করে শরীরে।
কীভাবে বুঝবেন ইউরিক অ্যাসিড বেড়েছে?
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কোনও প্রাথমিক লক্ষণ স্পষ্টত নাও থাকতে পারে। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ ধীরে ধীরে দেখা দেয়, যা অবহেলা করলে গাউট (gout), কিডনিতে পাথর এমনকি জয়েন্টের স্থায়ী ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে।
১. জয়েন্টে ব্যথা এবং ফোলা ভাব: ইউরিক অ্যাসিডের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল পায়ের বুড়ো আঙুল, গোড়ালি বা হাঁটুতে হঠাৎ করে ব্যথা শুরু হওয়া। ফোলা ও লালচে ভাব। এই ব্যথা সাধারণত রাতে তীব্র হয় এবং ঘুম ভেঙে যেতে পারে। এটি গাউটের প্রথম লক্ষণ হতে পারে, যা ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার কারণে হয়।
২. জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া: যদি দেখেন সকালে উঠেই হাত বা পায়ের জয়েন্ট শক্ত হয়ে আছে বা নাড়াতে কষ্ট হচ্ছে, তাহলে সেটিও ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
৩. কিডনির সমস্যা: অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কিডনিতে জমে পাথর (kidney stone) তৈরি করতে পারে। এর ফলে কোমরে ব্যথা, প্রস্রাবে জ্বালাভাব, রক্ত যাওয়া বা ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।
৪. চুলকানি এবং র্যাশ: অনেক সময় ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে শরীরের ত্বকে চুলকানি ও লালচে র্যাশ দেখা দেয়, যা সহজে ঠিক হয় না।
৫. দুর্বলতা: হাই ইউরিক অ্যাসিড শরীরে বিষাক্ততা সৃষ্টি করে যার ফলে সারা দিন দুর্বল লাগতে পারে, মন খারাপ, এবং কাজে মনোযোগে ঘাটতি হতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড পরীক্ষা কীভাবে করবেন?
নিশ্চিত হতে হলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত, যাকে বলে Serum Uric Acid Test। পুরুষদের জন্য রক্তে স্বাভাবিক ইউরিকের অ্যাসিডের মাত্রা: ৩.৪ – ৭.০mg/dL, আর মহিলাদের ক্ষেত্রে ২.৪ – ৬.০ mg/dL।
সূত্র: https://tv9bangla.com/health/how-do-you-know-that-deadly-uric-acid-is-silently-increasing-in-your-body-1227270.html
সজিব