
ছবিঃ সংগৃহীত
বর্ষাকালে যেমন প্রকৃতি সজীব হয়ে ওঠে, তেমনি বাড়ে গাছপালার নানা রোগ ও সমস্যার আশঙ্কাও। বিশেষ করে ঘরের ভিতরে রাখা ইনডোর প্ল্যান্টগুলোর জন্য এই সময়টা বেশ সংবেদনশীল। অতিরিক্ত আর্দ্রতা, আলো-হাওয়ার অভাব এবং পানির অতিপ্রবাহের কারণে গাছ আক্রান্ত হতে পারে ছত্রাকে। তাই এই মৌসুমে গাছের যত্ন নেওয়ার সময় কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
চলুন জেনে নিই বর্ষাকালে ইনডোর গাছের যত্নে কী করবেন এবং কী করবেন না:
✅ কী করবেন:
১. মাটি শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিন:
বর্ষায় বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকে, তাই নিয়মিত পানি দিলে মাটি ভিজে থেকে যায়। এতে গাছের গোড়ায় পচন ধরতে পারে। তাই মাটি আঙুল দিয়ে দেখে শুকিয়ে গেলে তবেই পানি দিন।
২. আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন:
ঘরের যে অংশে প্রাকৃতিক আলো আসে, সেখানে গাছ রাখুন। গাছকে মাঝে মাঝে বাইরে এনে রোদে দিন। এছাড়া ঘরের জানালা খোলা রাখলে হাওয়ার চলাচল হবে।
৩. ছত্রাক প্রতিরোধে নিয়মিত পাতা পরিষ্কার করুন:
পাতায় ধুলো বা পানির জমে থাকা ছত্রাক জন্মাতে পারে। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার গাছে জমে থাকা ময়লা বা পচা পাতা তুলে দিন।
৪. অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখুন:
টবের নিচে পানি বেরিয়ে যাওয়ার হোল বা ছিদ্র থাকা বাধ্যতামূলক। এতে অতিরিক্ত পানি গাছের শেকড়ে পচন ধরতে পারবে না।
৫. দম বন্ধ করে রাখা গাছ মাঝে মাঝে বের করে দিন:
যেসব গাছ বারান্দায় রাখার মতো নয়, সেগুলোকেও সপ্তাহে অন্তত একদিন ২-৩ ঘণ্টার জন্য বারান্দা বা উন্মুক্ত স্থানে রাখুন।
❌ কী করবেন না:
১. রোজ পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন:
বৃষ্টির দিনে প্রতিদিন পানি দেওয়া গাছের ক্ষতি করে। তাই অভ্যাস থেকে না, বরং গাছের প্রয়োজন দেখে পানি দিন।
২. স্যাঁতসেঁতে জায়গায় গাছ রাখবেন না:
ঘরের এমন কোণে গাছ রাখবেন না যেখানে বাতাস প্রবাহ নেই। এতে ছত্রাক সহজেই বাসা বাঁধে।
৩. একসঙ্গে অনেক সার দেবেন না:
অনেকেই বর্ষায় গাছ দুর্বল হয়ে গেছে মনে করে একসঙ্গে বেশি সার বা কম্পোস্ট দিয়ে ফেলেন। এটা না করে বরং হালকা তরল সার সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
৪. জমে থাকা পানি ফেলে দিতে ভুলবেন না:
টবের নিচে বা পাশের প্লেটে পানি জমে থাকলে তা ছত্রাক বা মশার জন্ম দিতে পারে। নিয়মিত চেক করে পানি ফেলে দিন।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:
ঢাকার গার্ডেনিং এক্সপার্ট জয়া হক বলেন, “বর্ষাকাল ইনডোর প্ল্যান্টের জন্য চ্যালেঞ্জিং হলেও ঠিকমতো যত্ন নিলে এই সময়েই গাছ অনেক সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে। তবে আলো ও পানি নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”
আলীম