ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

এই ৫টি লক্ষণ মানেই শরীরে লুকিয়ে আছে মারাত্মক ক্যান্সার? জেনে নিন এখনই

প্রকাশিত: ১২:৪০, ৪ আগস্ট ২০২৫

এই ৫টি লক্ষণ মানেই শরীরে লুকিয়ে আছে মারাত্মক ক্যান্সার? জেনে নিন এখনই

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর একটি বড় কারণ কোলন ক্যান্সার, যা কোলোরেক্টাল ক্যান্সার নামেও পরিচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, ২০২০ সালে কোলোরেক্টাল ক্যান্সারের ১৯ লাখেরও বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯ লাখ ৩০ হাজার মানুষের। সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০৪০ সালের মধ্যে প্রতি বছর নতুন রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩২ লাখে (৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি) এবং মৃত্যুর সংখ্যা পৌঁছাবে বছরে ১৬ লাখে (৭৩ শতাংশ বৃদ্ধি)।

তবে এই ক্যান্সার যদি প্রাথমিক অবস্থাতেই ধরা পড়ে, তাহলে চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়। সমস্যা হলো—এর অনেক প্রাথমিক উপসর্গই এতটাই সূক্ষ্ম যে তা সহজে নজরে পড়ে না কিংবা ভুলভাবে অন্য সাধারণ রোগ ভেবে এড়িয়ে যাওয়া হয়। ফলে দেরিতে রোগ নির্ণয় হয় এবং চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। নিচে কোলন ক্যান্সারের এমন ৫টি সাধারণ লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যা অধিকাংশ মানুষই অবহেলা করে থাকেন:

১. মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন

মলত্যাগের স্বাভাবিক অভ্যাসে যেকোনো স্থায়ী পরিবর্তন উপেক্ষা করা ঠিক নয়। যেমন—দীর্ঘদিন ধরে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলত্যাগের পর সম্পূর্ণ খালি না হওয়ার অনুভূতি কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই একে খাদ্যাভ্যাস বা মানসিক চাপের ফল মনে করে থাকেন। তবে এক সপ্তাহের বেশি এ ধরনের সমস্যা স্থায়ী হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

২. মলে রক্ত দেখা

মলে উজ্জ্বল লাল বা কালচে রক্ত দেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। অনেকেই এটিকে অর্শ বা হালকা পেটের সমস্যার কারণে হওয়া ভাবেন। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, রক্তাক্ত মল বা রক্তপাত কোলন ক্যান্সারের একটি সাধারণ উপসর্গ, যা অবহেলা করা বিপজ্জনক হতে পারে। দ্রুত কোলনোস্কোপির মাধ্যমে কারণ খুঁজে বের করা উচিত।

৩. পেটের অস্বস্তি বা ব্যথা

পেটের বারবার ক্র্যাম্প, ব্যথা বা ফুলে যাওয়া এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হলে এটি কোলন ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে। অনেকেই একে গ্যাস্ট্রিক বা আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome) মনে করেন। কিন্তু সাধারণ ওষুধেও উপশম না হলে এবং সঙ্গে অন্য লক্ষণ থাকলে চিকিৎসা করানো উচিত।

৪. হঠাৎ ও অকারণে ওজন কমে যাওয়া

অভ্যাস না বদলিয়ে বা চেষ্টার বাইরে হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া কখনোই ভালো লক্ষণ নয়। যদি কোনো কারণ ছাড়াই ১০ পাউন্ড বা তার বেশি ওজন কমে যায়, তাহলে তা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। অনেকেই একে ইতিবাচক পরিবর্তন ভেবে ভুল করেন, কিন্তু এটি অবহেলা না করাই ভালো—বিশেষ করে যদি সঙ্গে অন্য উপসর্গগুলোও থাকে।

৫. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি

প্রচণ্ড ক্লান্তি, যা বিশ্রাম নেয়ার পরও কাটে না, সেটাও কোলন ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ ও অ্যানিমিয়ার কারণে এই ক্লান্তি দেখা দেয়। ব্যস্ত জীবনের অংশ ভেবে অনেকেই এই লক্ষণকে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু অন্য উপসর্গের সঙ্গে এটি দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়।

পরামর্শ:
উপরের যেকোনো একটি বা একাধিক উপসর্গ যদি একসঙ্গে থাকে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে দেরি না করে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোলন ক্যান্সার শুরুতেই ধরা পড়লে জীবন বাঁচানোর সম্ভাবনা অনেক বেশি।

ইমরান

×