ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষিপ্ত ইতালির প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৩ আগস্ট ২০২৫

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষিপ্ত ইতালির প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশি দুই নাগরিকের পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বড় ধাক্কা খেল ইতালির আলোচিত আলবেনিয়া অভিবাসন প্রকল্প। আদালতের এ রায়ের পর ইতালির কট্টর ডানপন্থী সরকারের অভিবাসননীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি বলেছেন, “এই রায় আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

২০২৩ সালে ইতালি ও আলবেনিয়ার মধ্যে চুক্তি হয়, যার আওতায় সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে আসা অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় স্থাপিত ক্যাম্পে পাঠানো শুরু করে ইতালি। বাংলাদেশি ওই দুই নাগরিককেও সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে সরাসরি আলবেনিয়ার ক্যাম্পে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হলে তারা ইতালির আদালতে মামলা করেন।

পর্যায়ক্রমে মামলাটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে ১ আগস্ট দেওয়া রায়ে আদালত জানায়, “কোনো দেশকে নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না, যদি সেই নিরাপত্তা সব ব্যক্তির জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য না হয়।” আদালত আরও বলে, “নিরাপদ দেশ ঘোষণার আগে অবশ্যই বিচারিক পর্যালোচনার সুযোগ থাকতে হবে এবং সিদ্ধান্ত হতে হবে সুস্পষ্ট ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণের উপর ভিত্তি করে।”

এই রায় বাংলাদেশের পক্ষেই যায় এবং এতে প্রশ্নবিদ্ধ হয় বাংলাদেশকে ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের অক্টোবরে ইতালি বাংলাদেশ, মিশরসহ কয়েকটি দেশকে ‘নিরাপদ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল।

রায়ের পর এক বিবৃতিতে ইতালির সরকার অভিযোগ করে, “আদালত সরকারের তদন্তের চেয়ে বিচারকদের মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, যা অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতাকে দুর্বল করছে।”

তবে আদালতের রায় সত্ত্বেও ইতালি এখনো আলবেনিয়ায় অভিবাসী স্থানান্তর অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে তারা শুধুমাত্র তাদেরকেই পাঠাচ্ছে, যাদের আশ্রয় আবেদন ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যান হয়েছে।

বাংলাদেশি নাগরিকদের এই আইনি লড়াইকে ইতালির কিছু মানবাধিকার সংস্থা ‘বিচার বিভাগের জয়’ হিসেবে দেখছে, যা ইউরোপীয় মানবাধিকার মানদণ্ডকে আরও শক্তিশালী করেছে।

নুসরাত

×