ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

আমেরিকাকে শিক্ষা দিতে রাশিয়ার আকুলা সাবমেরিন তৈরি

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ৩ আগস্ট ২০২৫

আমেরিকাকে শিক্ষা দিতে রাশিয়ার আকুলা সাবমেরিন তৈরি

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তাপ আবারও চরমে, আর তার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এখন সাগরের অতল গহ্বরে। কারণ, রাশিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিন আকুলা ক্লাস আবারও আলোচনায়। বলা হয়, নিঃশব্দে চলতে সক্ষম এই দানব একবার যদি শত্রুর সীমানায় ঢুকে পড়ে, তাহলে তার ধ্বংস অনিবার্য।

বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর সাবমেরিন হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার আকুলা ক্লাস ডুবোজাহাজগুলো বিশেষভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যানজেলাস ক্লাস সাবমেরিনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে। ঘণ্টায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার বেগে চলতে সক্ষম এই ডুবোজাহাজ ২০০০ ফুট গভীরে নিঃশব্দে পৌঁছে যেতে পারে। এতে ক্যালিবার, গ্রানিথ, অনিক্স মিসাইল এবং অত্যাধুনিক টরপেডো বহন করা যায়।

রাশিয়ার নৌবাহিনীতে রয়েছে ৬৪টি সাবমেরিন, যার মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ক্যারিয়ার – দেশের কৌশলগত পারমাণবিক প্রতিরক্ষার মেরুদণ্ড। এছাড়াও রয়েছে বরই ক্লাস সাবমেরিন, যেগুলোতে ১৬টি বুলাভা এসএলবিএম ও ছয়টি টরপেডো লঞ্চার থাকে। এসব ডুবোজাহাজ পানির নিচে শত্রুর সাবমেরিন, যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন ঘাঁটিতে হামলা চালাতে সক্ষম।

সবচেয়ে আধুনিক রুশ সাবমেরিন হলো ইয়াসেন ক্লাস। ইতোমধ্যে চারটি সাবমেরিন যুক্ত হয়েছে রুশ বহরে। এসব সাবমেরিন শুধুমাত্র সাগরে নয়, স্থলভাগেও দূরপাল্লার হামলা চালাতে সক্ষম, যা যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা প্রতিপক্ষের জন্য ভয়াবহ হুমকি।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবমেরিন বহরে রয়েছে তিন ধরনের পরমাণু আক্রমণাত্মক সাবমেরিন – ভার্জিনিয়া ক্লাস, সিউলফ ক্লাস ও লস অ্যানজেলাস ক্লাস। এসব সাবমেরিনে আছে টমাহক, হারপুন মিসাইল এবং এমকে-৪৮ টরপেডো, যা শত্রুপক্ষের জাহাজ ধ্বংস, নজরদারি, মাইন যুদ্ধ এবং গুপ্তচরবৃত্তিতে ব্যবহৃত হয়।

সম্প্রতি রাশিয়ার সীমান্তের কাছাকাছি মার্কিন পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের পর দু’দেশের মধ্যকার এই সমুদ্র-স্নায়ুযুদ্ধের উত্তাপ নতুন করে উসকে উঠেছে। সাবমেরিন মোতায়েন, পারমাণবিক সক্ষমতা প্রদর্শন এবং সমুদ্রসীমায় আধিপত্যের এই প্রতিযোগিতা গোটা বিশ্বকে ঠেলে দিচ্ছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিঃশব্দে চলা এই “দানব” আকুলা ও ইয়াসেন শ্রেণীর রুশ সাবমেরিনগুলো এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক দুশ্চিন্তার কারণ। পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন এই সাবমেরিন বাহিনীর হাত ধরেই রাশিয়া যে সমুদ্রের নিচে নতুন করে আধিপত্য বিস্তারে প্রস্তুত, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে বিশ্ব রাজনৈতিক মানচিত্রে।
 

শেখ ফরিদ

×