
ছবি: সংগৃহীত।
এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পণ্য পরিবহনের অন্যতম মাধ্যম হলো গভীর সমুদ্রপথ। এই পথে দৈত্যকার কন্টেইনারবাহী জাহাজগুলো প্রতিনিয়ত পণ্য পরিবহন করছে। এসব জাহাজে ২০ থেকে ৪০ ফুট দীর্ঘ কন্টেইনার থাকে, যার মধ্যে দামি গাড়ি, বিলাসবহুল পণ্য, তরল পদার্থসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ মালামাল পরিবাহিত হয়।
কিন্তু যদি দুর্ঘটনাবশত কোনো জাহাজ থেকে কন্টেইনার সমুদ্রে পড়ে যায়, তখন কী হয় সেই মালামালের? বাস্তবে, এমন কন্টেইনার উদ্ধার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। শিপিং কোম্পানিগুলো তখন এগুলোকে 'Lost at Sea' হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং বীমা সংস্থার কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করে। কারণ, সমুদ্রের গভীরে ডুবে যাওয়া কন্টেইনার উদ্ধার করা যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি ব্যয়বহুল—অনেক সময়ে তা ওই পণ্যের দামের চেয়েও বেশি পড়ে যায়।
অবাক করা বিষয় হলো, অনেক কন্টেইনার পুরোপুরি না ডুবে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানির ওপরে আধাডোবা অবস্থায় ভেসে থাকে। আর তখনই ঘটে অদ্ভুত ঘটনা—যদি কেউ এই ভাসমান কন্টেইনার খুঁজে পান এবং সেটিকে উপকূলে নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে অনেক দেশে ‘Finders Keepers’ নীতিমালার আওতায় সেই ব্যক্তি কন্টেইনারের মালিক বনে যান। অর্থাৎ যে খুঁজে পায়, সেই মালিক। এতে কেউ কেউ রাতারাতি ধনীও হয়ে যান।
তবে এখানে আইনি জটিলতাও আছে। যদি প্রকৃত মালিক বা শিপিং কোম্পানি কন্টেইনারটির মালিকানা দাবি করে, তাহলে সেই ব্যক্তি আইনি মালিকানা হারাতে পারেন। এ ছাড়া অনেক সময় কন্টেইনারে অবৈধ সামগ্রী, মাদক, অস্ত্র বা বিষাক্ত রাসায়নিক থাকতে পারে, যা আইনগত ও শারীরিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এই কারণেই সমুদ্রে ভেসে থাকা কন্টেইনার শুধু রোমাঞ্চকর আবিষ্কারের গল্প নয়, বরং এটি হতে পারে ভাগ্য বদলের সুযোগ কিংবা বিপদের ঘন্টা।
নুসরাত