
মহাকাশের পথে নতুন ইতিহাস গড়ে স্পেসএক্স শনিবার মাত্র ১৫ ঘণ্টার মধ্যে চারজন নভোচারীকে নিয়ে পৌঁছে গেল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস)। কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করা এই দলটি আগামী ছয় মাসেরও বেশি সময় পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরবে, সেখানে নতুন দায়িত্ব নেবে এবং মানব গবেষণার সীমা বিস্তার করবে।
এই চার সদস্যের দলে রয়েছেন দুইজন নাসার নভোচারী জেনা কার্ডম্যান ও মাইক ফিঙ্কে, একজণ রুশ নভোচারী ওলেগ প্লাটোনভ, এবং একজণ জাপানের কিমিয়া ইউই। ক্যাপসুল যখন স্টেশনে সংযুক্ত হলো, তখন মাইক ফিঙ্কে রেডিওতে বলেন, “হ্যালো, স্পেস স্টেশন!” এক মুহূর্তের আনন্দঘন সেলাম যা বললো মানুষের অসীম কৌতূহল আর সাহসিকতার গল্প।
গত বছর জেনা কার্ডম্যানকে একটি স্পেসএক্স মিশনে সুযোগ দেয়া হয়নি, কারণ নাসার দুই পাইলট বুয়িং স্টারলাইনারের পরীক্ষামূলক পাইলট সেই আসনে ছিলেন। বুয়িংয়ের স্পেসক্রাফটে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে তাদের থাকার সময় আটকে গিয়েছিল দীর্ঘ নয় মাস পর্যন্ত। আর এবার সেই দীর্ঘ অপেক্ষার পর নতুন আশার আলো নিয়ে ফিরে এলেন কার্ডম্যান।
ফিঙ্কে ও ইউই মূলত স্টারলাইনার মিশনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, কিন্তু যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে যেটি স্থগিত হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত, তাই তারা স্পেসএক্সের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, প্লাটোনভ সয়ুজ উৎক্ষেপণে থাকা এক অজানা অসুস্থতার কারণে বাদ পড়েছিলেন, এবার নতুন এই সুযোগে ফিরলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে তাদের আগমন আইএসএসের সদস্য সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যান্য নভোচারীরা তাদের স্বাগত জানিয়ে ঠান্ডা পানীয় ও গরম খাবারের ব্যবস্থা করেছিল। তারা আসার ফলে মার্চ থেকে সেখানে অবস্থানরত চার সদস্য দেশে ফিরে যাবেন, যাদের প্রত্যাবর্তন বুধবার থেকে শুরু হতে পারে।
যদিও আমেরিকার স্পেসএক্সের এই ১৫ ঘণ্টার যাত্রা দারুণ দ্রুত, তবে রাশিয়ার কাছে এখনও তিন ঘণ্টার রেকর্ড অটুট রয়েছে, যা মহাকাশ স্টেশনে সবচেয়ে দ্রুত পৌঁছানোর ইতিহাস।
স্পেসএক্সের এই সাফল্য শুধু প্রযুক্তির জয় নয়, মানুষের স্বপ্ন ও সাহসিকতার প্রতিফলন। এটি আমাদের মহাকাশ অভিযানে এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে সীমাহীন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাচ্ছে। আগামী ছয় মাসে এই চার নভোচারী কী কী অনন্য গবেষণা এবং আবিষ্কার করবেন, তা আগ্রহভরে অপেক্ষা করা হচ্ছে বিশ্বজুড়ে।
সূত্র:https://tinyurl.com/yc5s2tb7
আফরোজা