
ছবি : সংগৃহীত
বিশ্বব্যাপী লিভার ক্যান্সারের হার বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। তবে আশার খবর হল, স্বাস্থ্যসচেতন জীবনযাপন ও কিছু অভ্যাসগত পরিবর্তনের মাধ্যমে এই মারণ রোগের ঝুঁকি প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব বলে দাবি করছেন গবেষকরা। সম্প্রতি ‘দ্য ল্যানসেট কমিশন’ এবং ‘জার্নাল অফ হেপাটোলজি’-তে প্রকাশিত একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
📊 ভয়াবহ বাস্তব চিত্র
প্রতিবছর বিশ্বের ৪৬টি দেশে প্রথম তিনটি ক্যান্সারে লিভার ক্যানসার অন্যতম।
২০৪০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী লিভার ক্যান্সারের হার ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
২০৫০ সালের মধ্যে ‘মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়েটোহেপাটাইটিস (MASH)’ বা ফ্যাটি লিভারের প্রকোপ ৩৫ শতাংশ বাড়বে বলে আশঙ্কা।
ঝুঁকিপূর্ণ অভ্যাস
বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার ক্যান্সারের পেছনে যে তিনটি প্রধান কারণ রয়েছে, তা হলো:
1. অতিরিক্ত মদ্যপান
2. হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস সংক্রমণ
3. স্থূলতা ও ডায়াবেটিসজনিত ফ্যাটি লিভার (MASH)
বিশেষ করে স্থূলতা ও টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এই ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক বেশি।
গবেষকদের কী মত?
ইউনিভার্সিটি অফ হংকং-এর অধ্যাপক স্টিফেন লাম চ্যান জানিয়েছেন, ‘‘লিভার ক্যান্সারের পাঁচটির মধ্যে তিনটির সঙ্গে কোনও না কোনোভাবে হেপাটাইটিস, স্থূলতা বা মদ্যপানের যোগ রয়েছে।’’
তাঁর মতে, সরকারিভাবে এই বিষয়ে আরও সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
গবেষণা বলছে, যদি বিশ্বের মাত্র ২-৫% মানুষও বছরে ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হন, তাহলে আগামী ২৫ বছরে ৯০ লক্ষ থেকে ১.৭ কোটি মানুষের মধ্যে লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।
✅ কী কী অভ্যাস বদলালে কমবে ঝুঁকি?
🟢 হেপাটাইটিস বি ও সি-এর টিকা: শিশুকাল থেকেই এই টিকার আওতায় আনতে হবে সকলকে।
🟢 মদ্যপান বর্জন: নিয়মিত মদ্যপান লিভারকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত করে।
🟢 ওজন নিয়ন্ত্রণ: সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা ও নিয়মিত হাঁটার মাধ্যমে স্থূলতা রোধ করতে হবে।
🟢 ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: শর্করা ও তেল-চর্বিযুক্ত খাবার কমিয়ে, ওষুধ নিয়ম মেনে গ্রহণ করতে হবে।
🟢 ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা ও পর্যবেক্ষণ: যাঁদের ফ্যাটি লিভার ধরা পড়েছে, তাঁদের নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শে লিভারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।
🟢 ধূমপান ত্যাগ: ধূমপানও লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে।
➡️ শুধু ওষুধ বা চিকিৎসা নয়, বরং জীবনযাপন বদলেই প্রতিরোধ করা সম্ভব ভয়াবহ লিভার ক্যান্সারকে।
➡️ শিশুদের টিকাদান, সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যবান জীবনযাপনই হতে পারে ভবিষ্যতের মূল হাতিয়ার।
➡️ মনে রাখা জরুরি—প্রতিরোধই সর্বোত্তম চিকিৎসা।
📝 সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন। আজ থেকেই শুরু হোক বদল।
Mily