
ছবি : সংগৃহীত
লিভার ক্যান্সারের পিছনে এত দিন পর্যন্ত প্রধানত হেপাটাইটিস বি ও সি-কে দায়ী করা হলেও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে ভিন্ন কথা। তাদের সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, পাঁচ ধরনের হেপাটাইটিস ভাইরাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর ও মারাত্মক প্রভাব ফেলে হেপাটাইটিস ডি। একে আখ্যা দেওয়া হয়েছে ‘আসল খলনায়ক’ হিসেবে।
🔬 কী বলছে হু-র গবেষণা?
বিশ্বজুড়ে ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের মধ্যে অন্তত ২.৯৮ কোটির শরীরে ধরা পড়েছে হেপাটাইটিস বি ও ডি ভাইরাস। এ দু’টি একসঙ্গে লিভারে ভয়াবহ আক্রমণ চালিয়ে জন্ডিস, ফ্যাটি লিভার, সিরোসিস এবং শেষপর্যন্ত লিভার ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হেপাটাইটিস ডি একা নিজে কিছু করতে পারে না। এটি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসের উপস্থিতিতেই সক্রিয় হয়। দুটো একসঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে ধীরে ধীরে লিভারের কোষ ধ্বংস করতে থাকে। গবেষণায় জানা গেছে, হেপাটাইটিস ডি-তে আক্রান্ত ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনেরই ক্রনিক লিভার ডিজিজ দেখা যায়।
সংক্রমণ কীভাবে ছড়ায়?
হেপাটাইটিস ডি মূলত ছড়ায় আক্রান্তের রক্ত ও দেহরসের মাধ্যমে—
- একাধিক ব্যক্তির মধ্যে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ ভাগ করে ব্যবহার
- অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক
- মায়ের দেহ থেকে গর্ভস্থ শিশুর মধ্যে
- সেলুনে ব্যবহৃত সংক্রমিত ব্লেড
- উল্কি আঁকার যন্ত্রে জীবাণুমুক্তির ঘাটতি
উপসর্গ কী কী?
🔹 জন্ডিস
🔹 খাবারে অরুচি ও বিস্বাদ
🔹 জ্বরজ্বর ভাব
🔹 পেটে ব্যথা
🔹 বমি ভাব
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ?
যেখানে হেপাটাইটিস বি ও সি-এর জন্য টিকা রয়েছে, হেপাটাইটিস ডি-র কোনও নির্দিষ্ট টিকা নেই। ফলে, সংক্রমণ হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়াই একমাত্র উপায়। রোগ দীর্ঘস্থায়ী হলে লিভার প্রতিস্থাপন পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে।
হেপাটাইটিস এ ও ই কী তুলনায় নিরীহ?
জলবাহিত হেপাটাইটিস এ ও ই তুলনামূলকভাবে কম বিপজ্জনক এবং সঠিক চিকিৎসায় পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব। তবে হেপাটাইটিস বি, সি ও ডি নিয়ে এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে লিভার ক্যানসার ও মৃত্যুর হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
নিজেকে নিরাপদ রাখতে টিকা নেওয়া, ইনজেকশনের সরঞ্জাম ভাগ না করা, নিরাপদ যৌন আচরণ এবং পরিচ্ছন্নতা মেনে চলার উপর জোর দিন।
সতর্ক থাকুন, সচেতন হোন — হেপাটাইটিস ডি হতে পারে নীরব ঘাতক।
Mily