ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

রোগাদেরও হতে পারে ফ্যাটি লিভার! ঝুঁকি কমাতে মাসে ঠিক কত লিটার তেল খাবেন, জানালেন চিকিৎসক

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ৪ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ০৩:১৬, ৪ আগস্ট ২০২৫

রোগাদেরও হতে পারে ফ্যাটি লিভার! ঝুঁকি কমাতে মাসে ঠিক কত লিটার তেল খাবেন, জানালেন চিকিৎসক

ছবি : সংগৃহীত

ফ্যাটি লিভার মানেই কি শুধু মোটা মানুষের রোগ? একেবারেই নয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, রোগা চেহারার মানুষও এই বিপজ্জনক অসুখে আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষ করে যখন শরীরে অদৃশ্য স্থানে (একটোপিক ফ্যাট) চর্বি জমে যায়, তখন ঝুঁকি থাকে ফ্যাটি লিভারের। এ নিয়ে সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা দিয়েছেন বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. অভিজিৎ চৌধুরী।

ফ্যাটি লিভার মানেই মোটা মানুষ নয়❗

চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই রোগের নাম মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটোটিক লিভার ডিজিজ বা MASLD। আগে একে বলা হতো নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD)। যদিও অনেকের ধারণা, মেদবহুল শরীরেই শুধু এই রোগ হয়, বাস্তবে রোগা লোকেরাও আক্রান্ত হতে পারেন।

ডা. অভিজিৎ বলেন, “ফ্যাটি লিভার সুখীদের অসুখ। যত কম পরিশ্রম করব, তত এই রোগের ঝুঁকি বাড়বে। রোগা মানুষের শরীরেও অদৃশ্যভাবে (একটোপিক অঞ্চল) চর্বি জমে যেতে পারে—যা বাইরে থেকে ধরা পড়ে না।”

এখনই নেই ওষুধ, সমাধান কেবল অভ্যাসে

বর্তমানে ফ্যাটি লিভারের কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। তবে আশা করা হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ওষুধ বাজারে আসবে। কিন্তু ততদিন নিজেই নিতে হবে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ।

✅ কীভাবে কমাবেন ঝুঁকি?

🟢 তেল খাওয়া কমান:
ডা. অভিজিৎ এর মতে, “রান্নার তেল একপ্রকার বিষ। এক জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে মাসে ৫০০ মিলিলিটারের বেশি তেল খাওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ চার জনের পরিবারে মাসে ২ লিটারের বেশি তেল না কেনাই শ্রেয়।”

🟢 রোজকার পরিশ্রম জরুরি:

🔹 হাঁটা 

🔹 দৌড়ানো,

🔹 সাইকেল চালানো

🔹 ঘরের কাজের মধ্য দিয়ে ঘাম ঝরানো

🔹 একটানা বসে না থাকা


 “ঘাম না ঝরালে এই রোগ থেকে নিস্তার পাওয়া কঠিন,” সতর্ক করেন চিকিৎসক।

🟢 জটিল চর্বি ও শর্করা পরিহার:

ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত ভাজাভুজি, চিনি—সব কিছুতেই লাগাম টানতে হবে।


🟢 নিয়মিত পরীক্ষানিরীক্ষা:

ওজন কম হলেও, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি বা ব্লাড টেস্টের মাধ্যমে ফ্যাটি লিভার চিহ্নিত করা সম্ভব। বছরে একবার অন্তত করানো উচিত।

🛑 ভুল ধারণা ত্যাগ করুন

✅ রোগা মানেই সুস্থ, এই ধারণা বিপজ্জনক।
✅ রান্নায় কম তেল মানেই কম স্বাদ—এটাও ভুল।
✅ ঘরে তৈরি খাবার খেলেই সব ঠিক—এমনও নয়, যদি তাতে অতিরিক্ত তেল ও কার্বোহাইড্রেট থাকে।


➡️ ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে ওষুধ নয়, অভ্যাসই হল প্রধান হাতিয়ার।
➡️ রোগা হলেও আপনি এই ঝুঁকির বাইরে নন।
➡️ ঘাম ঝরান, তেল কমান, সচেতন থাকুন—এই তিনেই বাঁচবে আপনার লিভার।

📝 আজ থেকেই বদল আনুন—তেল কমান, চলাফেরা বাড়ান, লিভার সুস্থ রাখুন!

Mily

×