ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

ইরানের হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘোষণা, পরের যুদ্ধে ইসরাইলের অস্তিত্ব থাকবে না

প্রকাশিত: ১৭:০০, ৩ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১৭:০০, ৩ আগস্ট ২০২৫

ইরানের হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘোষণা, পরের যুদ্ধে ইসরাইলের অস্তিত্ব থাকবে না

ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইলের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধে ইরানের মিজাইল সক্ষমতা দেখেই হতভম্ব হয়েছিল বিশ্ব। ইসরাইলের বহুস্তরীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে একের পর এক হামলা চালায় ইরানের অত্যাধুনিক মিজাইল, যার ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত হয়ে শেষমেশ যুদ্ধবিরতির পথে হাঁটতে বাধ্য হয় ইসরাইল। কিন্তু দখলদারদের সেই পোড়া ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই এবার এসেছে আরও বড় দুঃসংবাদ—ইরান ঘোষণা দিয়েছে হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক মিজাইল তৈরির।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর এরোস্পেস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির আলী হাজিজাদে সম্প্রতি ঘোষণা দেন, ইরান সফলভাবে একটি হাইপারসোনিক ব্যালিস্টিক মিজাইল তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এই মিজাইল শত্রুদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য "প্রায় প্রতিরোধযোগ্য নয়" এবং এটি এমনকি বায়ুমণ্ডলের বাইরেও থাকা অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও ফাঁকি দিতে পারে।

হাজিজাদে আরও বলেন, “আমার বিশ্বাস আগামী কয়েক দশকে এই মিজাইল ঠেকানোর মতো কোনো প্রযুক্তি তৈরি হবে না।” হাইপারসোনিক মিজাইল শব্দের গতির পাঁচ গুণ বা তার চেয়েও বেশি গতিতে ছুটে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, যার ফলে একে শনাক্ত করা বা প্রতিহত করা প্রচলিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত কঠিন। এ ছাড়া এই মিজাইলের গতিপথ পূর্বাভাস করাও কঠিন, এমনকি রাডার ফাঁকি দিয়েও আঘাত হানতে সক্ষম এটি।

গত কয়েক দশক ধরেই ইরান নিজস্ব প্রযুক্তিতে মিজাইল নির্মাণে মনোযোগ দিয়েছে। ২০২০ সালে ইরানের তৎকালীন নৌবাহিনী প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল হোসেন খানজাদী সুপারসোনিক মিজাইল তৈরির ঘোষণা দেন, যেখানে টার্বোফাইন ইঞ্জিন ব্যবহারের কথা জানানো হয়। এরপর ২০২৩ সালের জুনে ফাতেহ-টু সিরিজের মিজাইল উন্মোচন করে আইআরজিসি, দাবি করা হয় সেটি হাইপারসোনিক—যার গতি শব্দের চেয়েও ১৩ গুণ বেশি।

তবে আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, ফাতেহ-টু অত্যাধুনিক হলেও তা প্রকৃত অর্থে হাইপারসোনিক নয়। এমনকি এখনো পর্যন্ত ইরান প্রকাশ্যে কোনো হাইপারসোনিক বা সুপারসোনিক মিজাইলের সফল পরীক্ষা চালায়নি। তবুও ইরানি মিজাইলগুলোর বিস্ফোরক শক্তি, গতি এবং লক্ষ্যবস্তুর ওপর নিখুঁত আঘাত হানার সক্ষমতা যে সত্যিই ভয়ংকর—তা আর অস্বীকার করার উপায় নেই।

যদি সত্যিই ইরান এবার কার্যকর একটি হাইপারসোনিক মিজাইল তৈরি করে থাকে, তাহলে এটি শুধু ইসরাইল নয়, মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিক ভারসাম্যকেই পাল্টে দিতে পারে। এমন বাস্তবতায় তেল আবিবের জন্য সামনে আরও অস্থির সময় অপেক্ষা করছে বলেই আশঙ্কা করছেন পর্যবেক্ষকরা।

শেখ ফরিদ 

×