
ছবি: সংগৃহীত
গাজার ভয়াবহ খাদ্য সংকট এতটাই চরমে উঠেছে যে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিরাও এখন অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। নিজের কঙ্কালসার দেহ নিয়ে ইভিয়েতার ডেভিড নামে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণ জিম্মি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে করুণভাবে অনুরোধ করেছেন—যুদ্ধ থামিয়ে তাদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে।
হামাস প্রকাশিত এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দীর্ঘ সরু টানেলের ভেতর অন্ধকার ও গুমোট পরিবেশে বসবাস করছেন ডেভিড। তিনি বলছেন,"আমি দিনের পর দিন শুধু ডাল আর বিন খেয়ে বেঁচে আছি। অনেক অনেক দিন খাবারও দেওয়া হয় না। আমি নিজেই আমার কবর খুঁড়ছি। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে অনুরোধ করছি, আমাকে এবং আমার সাথের সবাইকে এই নরক থেকে মুক্ত করুন।"
এই ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে হামাস ইসরায়েলি সরকারের বর্বরতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরতে চেয়েছে, যেখানে নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও খাদ্য চাহিদাও পূরণে সরকার অক্ষম বলে অভিযোগ করা হয়।
হামাসের জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি নাগরিক টালসোহাম ভিডিওটি রিপোস্ট করে বলেন— "আমার নাম টালসোহাম। আমি হামাসের হাতে ৫০৫ দিন বন্দি ছিলাম। এই টানেলে ৪৮১ দিন ডেভিড আমার পাশে ছিল। এখন তার অবস্থা খুবই খারাপ।" তিনি ইসরায়েলি জনগণ ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন বন্দিদের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ও মুক্তির জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়।
ইসরায়েলের অবরোধে গাজার ২২ লাখ মানুষ খাদ্য, পানি ও ওষুধ থেকে বিচ্ছিন্ন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এই অবরোধের ফলে গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ চলছে, যেখানে প্রতি তিন শিশুর একজন চরম অপুষ্টিতে ভুগছে এবং শতাধিক শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক অনাহারে মারা গেছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, ইসরায়েলি জিম্মিরাও সেই একই অভুক্ত বাস্তবতার শিকার, যা ইসরায়েলি প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বর্তমানে হামাসের জিম্মায় কমপক্ষে ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরোধী চাপ বাড়াতেই এই ভিডিও প্রকাশ করেছে হামাস।
ছামিয়া