ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৩ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

এবার ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র নিয়ে ঘুম হারাম ভারতের

প্রকাশিত: ২০:০৪, ৩ আগস্ট ২০২৫

এবার ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র নিয়ে ঘুম হারাম ভারতের

ছবি: সংগৃহীত।

এক সময়ের মধ্যযুগে মুসলিম শাসিত বাংলার ইতিহাস ঘিরে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে দেখা দিয়েছে নতুন উত্তেজনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে "সালতানাতি বাংলা" শিরোনামে প্রকাশিত একটি মানচিত্রে ভারতের কয়েকটি রাজ্যকে ঐতিহাসিক বৃহত্তর বাংলার অংশ হিসেবে দেখানো হলে বিতর্কের সূত্রপাত হয়।

প্রদর্শনীর ঐ মানচিত্রে প্রাচীন বাংলার বিস্তৃতি তুলে ধরা হয়, যেখানে বর্তমান বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বিহার, উড়িষ্যা, আসাম এবং মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চলকে শামিল করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি বিজেপির নজরে আসে এবং তা দেশটির সংসদ পর্যন্ত গড়ায়।

বিজেপির এক এমপি সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করে অভিযোগ করেন, এই প্রচারণা তুরস্কভিত্তিক ‘টার্কিশ ইউথ ফেডারেশন’ নামের একটি চরমপন্থী ইসলামি এনজিও-র মদদপুষ্ট। তিনি বলেন, "সালতানাতি বাংলা" নামে একটি সংগঠন এই মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।

এ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জবাবে বাংলাদেশ জানায়, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক ঐতিহাসিক প্রদর্শনীতে মধ্যযুগীয় বাংলার মানচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছিল। এটি ছিল একাডেমিক ও ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রচলিত তথ্য উপস্থাপন।

বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়, "সালতানাতি বাংলা" নামে কোনো সংগঠন বাংলাদেশে নেই এবং এ কার্যক্রমের সঙ্গে কোনো বিদেশি সংগঠনের যোগসূত্র নেই।

তবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরণের প্রচারণা ঘিরে বাংলাদেশকে নিবিড় নজরে রাখা হচ্ছে এবং ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

ঐতিহাসিকভাবে "সালতানাতি বাংলা" বা সুলতানি আমল ছিল ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার একটি স্বতন্ত্র মুসলিম শাসনামল, যার বিস্তৃতি বর্তমান বাংলাদেশের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা ও আসাম অঞ্চলেও ছড়িয়ে ছিল। দুই শতাব্দীর এই শাসনকালে বাংলায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটেছিল।

নুসরাত

×