
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার মাঝে এবার চীন-পাকিস্তান জোট ভারতের সামনে এক নতুন সামরিক চ্যালেঞ্জ উত্থাপন করল। সম্প্রতি পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের সেনাবাহিনীর জন্য চীনের তৈরি অত্যাধুনিক জে-১০ এমই অ্যাটাক হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই হেলিকপ্টার ভারতের আমেরিকান অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের মুখোমুখি হওয়ার শক্তি রাখে, যা সামরিক ভারসাম্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এর আগে রাফাল যুদ্ধবিমান হারানোর ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই, পাকিস্তানের হাতে এই অ্যাটাক হেলিকপ্টার চলে আসায় ভারতের প্রতিরক্ষা মহলে রীতিমতো অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে প্যাহেলগামে সংঘটিত সাম্প্রতিক হামলার পর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যে সামরিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, সেটিকে আরও উসকে দিচ্ছে এই সামরিক সংযোজন।
মুজাফফরগড় ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে জে-১০ এমই হেলিকপ্টারের অগ্নিশক্তি প্রদর্শনীতে নিজে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মনির। তিনি এই হেলিকপ্টারকে আর্মি এভিয়েশনের আধুনিকীকরণের এক বড় মাইলফলক বলে উল্লেখ করেন এবং বলেন, এটি সেনাবাহিনীর “সমন্বিত যুদ্ধক্ষেত্র প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতা” ও সম্ভাব্য শত্রুদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তমূলক প্রভাব রাখবে।
জে-১০ এমই হেলিকপ্টার সর্বাধুনিক রাডার সিস্টেম, উন্নত ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুট এবং সব আবহাওয়ায় কার্যক্ষম অস্ত্র ব্যবস্থাপনা নিয়ে সজ্জিত। এটি দিনে ও রাতে একইভাবে নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম।
চীনের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কতগুলো হেলিকপ্টার পাকিস্তানকে সরবরাহ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে ২০২৩ সালে সিঙ্গাপুর এয়ার শোতে প্রথমবারের মতো এই মডেলটি বিদেশে প্রদর্শন করে চীন। সেই সময় পাকিস্তান ছিল মডেলটির একমাত্র সম্ভাব্য রপ্তানিকারক গন্তব্য।
চীন-পাকিস্তানের এই ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক ভারতের জন্য যে বড় ধরনের কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তান এখন বিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষার উপর জোর দিচ্ছে এবং চীনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় নিজেদের ঘাটতি পূরণ করছে। অন্যদিকে ভারতের সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা বাজেট বড় হলেও, চীনা বিশ্লেষকদের ধারণা—পরবর্তী সংঘাতে পাকিস্তানের হাতে থাকা চীনা অস্ত্রই গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
এই অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন করে সামরিক ভারসাম্যহীনতা ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে, যার প্রভাব পড়তে পারে পুরো অঞ্চলের কৌশলগত স্থিতিশীলতার উপর।
শেখ ফরিদ