
ছবিঃ সংগৃহীত
আমরা অনেকেই মনে করি ECG করলেই বুঝে ফেলা যায় আমাদের হৃদ্যন্ত্র ঠিক আছে কিনা। কিন্তু কার্ডিওলজিস্ট ডা. নাভীন ভামরি বলছেন, ব্যাপারটা এতটা সহজ না। ECG-তে রিপোর্ট ঠিকঠাক আসলেও, সেটা সবসময় হৃদ্যন্ত্রের আসল অবস্থা বলে না। বরং ECG কেবল ২০-৩০ শতাংশ তথ্য দেয়। তাই আরও দুটো পরীক্ষার দরকার হয়—TMT (ট্রেডমিল টেস্ট) এবং ইকোকার্ডিওগ্রাফি।
ECG সব বলে না
একটি ভিডিও বার্তায় ডা. ভামরি বলেন, “ECG অনেক সময় স্বাভাবিক আসতে পারে, অথচ হার্টে বড় ধরনের সমস্যা থেকে যেতে পারে। ECG শুধু একটা প্রাথমিক ধারণা দেয়, কিন্তু পুরো চিত্র জানতে হলে আরও টেস্ট দরকার।”
TMT: দৌড়ে জানা যায় হার্ট কেমন কাজ করছে
TMT বা ট্রেডমিল টেস্টে রোগীকে হাঁটতে বা হালকা দৌড়াতে বলা হয়। সেই সময়েই রিয়েল-টাইমে ECG রেকর্ড করা হয়। ধীরে ধীরে ট্রেডমিলের গতি ও ঢাল বাড়ানো হয়, যেন দেখা যায় চাপের মুখে হৃদ্যন্ত্র কেমন প্রতিক্রিয়া জানায়।
এই টেস্টটা বিশেষ করে তখনই গুরুত্বপূর্ণ যখন বুকে ব্যথা হয়, শ্বাসকষ্ট হয়, কিংবা কারও আগে হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেছে। তখন বোঝা যায়, হার্টের পেশীগুলো চাপের সময় ঠিকমতো অক্সিজেন পাচ্ছে কিনা, রক্তচাপ বা হৃদ্স্পন্দনের গতি স্বাভাবিক কিনা।
ইকোকার্ডিওগ্রাফি: হার্টের একেবারে ভেতরের ছবি
ইকোকার্ডিওগ্রাফি হল একধরনের আল্ট্রাসাউন্ড টেস্ট, যেটা আমাদের হার্টের ভিতরের অবস্থা চোখে দেখিয়ে দেয়। হার্টের কতটা শক্তি দিয়ে রক্ত পাম্প করছে (ejection fraction), ভ্যাল্ভগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা, চেম্বারগুলো বড় হয়ে গেছে কিনা, কিংবা ভেতরে কোনও অস্বাভাবিক ফাঁক আছে কিনা—সবই বোঝা যায় এই পরীক্ষায়।
ডা. ভামরি বলছেন, “এই তিনটি টেস্ট একসাথে করলে আমরা প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভরযোগ্য তথ্য পেতে পারি। যাদের ঝুঁকি আছে বা আগে কখনো হার্টের সমস্যা হয়েছে, তাদের জন্য তো এই টেস্টগুলো একদম দরকারি।”
একটা কথা মনে রাখবেন: এই লেখাটা শুধুই সাধারণ তথ্য দেওয়ার জন্য। আপনার হার্ট নিয়ে যদি কোনও সন্দেহ থাকে, অবশ্যই একজন হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
আপনি শেষ কবে হার্ট চেকআপ করিয়েছেন?
- প্রতি বছর
- কয়েক বছর পরপর
- কখনোই না
হৃদ্যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, তা জানতে শুধুমাত্র ECG-এর উপর ভরসা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সময়মতো সঠিক পরীক্ষা করান, নিজের ও প্রিয়জনের জন্য সুস্থ থাকুন।
মারিয়া