
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যের দম্পতি ক্যালেব ও জাস্টিন রোজলার ফিনল্যান্ডে অনুষ্ঠিত স্ত্রী-বহন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ইতিহাস গড়েছেন। ১ মিনিট ১.১৭ সেকেন্ড সময় নিয়ে তারা জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। একইসঙ্গে পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন জাস্টিনের ওজনের সমপরিমাণ বিয়ার।
চলতি বছরের ৫ জুলাই, ফিনল্যান্ডের সোনকায়ারভিতে ২৫০ মিটার দীর্ঘ জল-কাদা ও বাধা-সংকুল ট্র্যাকে ক্যালেব কাঁধে তুলে নেন তাঁর স্ত্রী জাস্টিনকে। শুরু হয় দমবন্ধ করা দৌড়। অবশেষে রেকর্ড গড়ে তারা ছুঁয়ে ফেলেন ফিনিশিং লাইন।
ক্যালেব, যিনি একজন অভিজ্ঞ দৌড়বিদ ও ট্রায়াথলেট, প্রথম স্ত্রী-বহন প্রতিযোগিতার কথা জানতে পারেন এক টেলিভিশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে। “সেই সময় একবার দেখলাম ‘বিশ্বের ১০টি অদ্ভুত দৌড় প্রতিযোগিতা’ নিয়ে একটি রিল। কিন্তু এইটাই সবচেয়ে বাস্তব মনে হয়েছিল,” বলেন তিনি সিএনএন স্পোর্টসকে।
২০২১ সালে একটি স্থানীয় প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তাঁদের আগ্রহ বাড়ে। পরপর তিন বছর তারা উত্তর আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন হন এবং এবারই প্রথম ফিনল্যান্ডে গিয়ে বিশ্ব খেতাব জিতলেন।
তবে এই যাত্রা এতটা সহজ ছিল না। এই বছরের প্রতিযোগিতায় একটি গভীর জলকূপ ছিল নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে। ক্যালেব বলেন, “আমি ভেবেছিলাম আমি যথেষ্ট লম্বা... কিন্তু পুরোপুরি পানির নিচে চলে গেলাম, প্রায় আতঙ্কে পড়ে গিয়েছিলাম।”
জাস্টিন তখন “এস্তোনীয় বহন কৌশলে” তার স্বামীর কাঁধে উল্টো অবস্থায় ঝুলছিলেন — পা দুটো কাঁধে গোঁজা আর হাত দিয়ে আণ্ডারআর্মে শক্ত করে ধরা। “চোখ বন্ধ করো, নিঃশ্বাস রোধ করো, নিচে যাচ্ছি,”— এমনটা মনে পড়ছিল জাস্টিনের।
তাদের টাইমিং সারা দিন ধরে কেউ ছুঁতে পারেনি। তারা আগের চ্যাম্পিয়ন ভিতাউতাস কিরক্লিয়াউসকাস ও নেরিঙ্গা কিরক্লিয়াউসকিয়েনেকে তিন সেকেন্ডেরও বেশি ব্যবধানে হারান।
“শেষ প্রতিযোগী যখন দৌড়াচ্ছিল, হঠাৎ এক উপস্থাপক মাইক্রোফোন নিয়ে চলে আসে… তখনই বুঝতে পারি, ‘আমরাই জিতেছি!’” — বলেন ক্যালেব।
এই জয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রথম। “অবশেষে একজন আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন হলো — এটা সত্যিই দারুণ,”— বলেন ক্যালেব।
চার সন্তানের এই দম্পতি মাঝেমধ্যে স্থানীয় ট্রেইলে একসঙ্গে অনুশীলন করেন তাদের অনন্য ভঙ্গিমায়। পথচারীরা কখনো-কখনো আজব চোখে তাকালেও, শেষে তারা হাসিতে ফেটে পড়েন। “আমরা থেমে গিয়ে বলি, ‘হ্যাঁ, আমি জানি ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগছে।’ কিন্তু মানুষ সেটা বেশ মজারই মনে করে,”— বলেন ক্যালেব।
সবাই অবশ্য মজা নেয় না। “দুই রকম প্রতিক্রিয়া পাই — একদল বলে, ‘ওয়াও, দারুণ!’ আর অন্যরা বলে, ‘কেন? এটা কেন করবে?’”— এমনটাই জানান ক্যালেব।
তবে এখন আর তারা শুধু পার্কের ‘আজব দম্পতি’ নন— তারা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।
ইমরান