ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজায় ত্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় আরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত

প্রকাশিত: ০০:২৫, ৪ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ০০:২৬, ৪ আগস্ট ২০২৫

গাজায় ত্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় আরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ত্রাণ পাওয়ার জন্য অপেক্ষাকালে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৩২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে গত সপ্তাহে, জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। শনিবার বিভিন্ন এলাকায় ২৪ জন নিহত হয়, স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এবং মরদেহাগারের তথ্য থেকে জানা গেছে। এছাড়া রবিবার আরও ১৪ জন নিহত হয়েছে বলে রিপোর্ট এসেছে।

ত্রাণের জন্য এই প্রাণঘাতী লড়াই চললেও ইসরায়েল মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য আক্রমণ স্থগিত রাখার আশ্বাস দিয়েছে। গাজায় অপুষ্টিজনিত মৃত্যু ও ক্ষুধার্ত পরিস্থিতি ক্রমেই তীব্রতর হচ্ছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে এই ঘটনার কিছু অংশে তারা কেবল সতর্কতামূলক গুলি চালিয়েছে। এর মধ্যে বুধবারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য, যখন সীমানার কাছে ইসরায়েলি সৈন্যদের উপস্থিতিতে সাহায্যের জন্য গমের বস্তা নামানোর সময় ৯০ জনেরও বেশি নিহত হয়।

ইসরায়েলের এই সাহায্য সীমাবদ্ধতা আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের দুর্ভিক্ষ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় বর্তমানে ব্যাপক দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

গত সপ্তাহে ইসরায়েল বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে এয়ারড্রপের মাধ্যমে ত্রাণ এবং আরও ট্রাক গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে, তবে তবুও ত্রাণ কার্যক্রম যথেষ্ট দূর থেকে পূর্ণ হয়নি। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, প্রায় সব ত্রাণ সামগ্রী ট্রাক থেকে অল্পসময়ের মধ্যেই সশস্ত্র গ্যাং ও ক্ষুধার্ত জনতার দ্বারা লুট করা হচ্ছে, যার ফলে তা বিতরণের জন্য গুদামে পৌঁছানোই সম্ভব হচ্ছে না।

এই সংকটের প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুক্রবার দুই জন কর্মকর্তাকে গাজা পাঠিয়েছেন, যারা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি মার্কিন তহবিল পায় এবং ইসরায়েলের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

এ বছরের এক পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির সময় জাতিসংঘ সংস্থাগুলো নিরাপদে ত্রাণ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছিল। তবে যুদ্ধের প্রথম ছয় মাস পর গাজার সীমান্তে ইসরায়েল পুরো নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার পর সেই ত্রাণ কার্যক্রম কঠিন হয়ে পড়ে।

ইসরায়েল বলেছে, তাদের এই ত্রাণ সীমাবদ্ধতার উদ্দেশ্য হামাসকে চাপ দেয়া এবং তার যোদ্ধাদের সুবিধা থেকে বিরত রাখা। তবে আন্তর্জাতিক সাহায্যকারী সংস্থা ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা এই সীমাবদ্ধতাগুলোকে সামষ্টিক শাস্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, তাদের ত্রাণ সশস্ত্র গ্যাংয়ের দখলে চলে যাচ্ছে, যাদের কিছু অংশ ইসরায়েল সরাসরি সমর্থন করে হামাসের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য।

গাজায় মানবিক সংকট দিন দিন গভীর হচ্ছে এবং ত্রাণ কার্যক্রমের ওপর থাকা বাধাগুলো সমস্যা আরও বাড়াচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত পদক্ষেপ ও অবাধ মানবিক সহায়তা প্রদান জরুরি হয়ে উঠেছে।

আফরোজা

×