ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

রাতে খাওয়ার পরে এক গ্লাস দুধ না হলে চলে না? অজান্তেই কী ঘটছে শরীরে?

প্রকাশিত: ১২:৩৯, ৫ আগস্ট ২০২৫

রাতে খাওয়ার পরে এক গ্লাস দুধ না হলে চলে না? অজান্তেই কী ঘটছে শরীরে?

অনেকেই আছেন যাঁদের রাতে খাওয়ার পরে এক গ্লাস গরম দুধ না হলে ঘুম আসে না। এটি অনেকের দীর্ঘদিনের অভ্যাস, আবার কেউ স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা ভেবে এই অভ্যাস গড়ে তুলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল—এই অভ্যাসটা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? না কি এতে লুকিয়ে আছে কিছু অসুবিধাও? আর কারা এই অভ্যাস থেকে লাভবান হবেন, বা কারা এই অভ্যাস এড়িয়ে চলবেন?

এই অভ্যাসের উপকারিতা:

১. ঘুম ভালো হয়: দুধে থাকে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড, যা ‘সেরোটোনিন’ ও ‘মেলাটোনিন’-এর নিঃসরণ বাড়ায়। এই দুটি হরমোন ঘুমের জন্য জরুরি। তাই রাতে গরম দুধ ঘুমের মান উন্নত করে।

২. পেট ভরাট লাগে ও হজমে সাহায্য করে: দুধে থাকা প্রোটিন ও ল্যাকটোজ ধীরে হজম হয়, ফলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। এটি হালকা ক্ষুধা বা রাতের মধ্যে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমায়।

৩. হাড়ের যত্নে সহায়ক: দুধে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন ডি যা হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী, বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে রাতে দুধ খেলে হাড় ক্ষয়ের সমস্যা কমতে পারে।

৪. মানসিক প্রশান্তি আনে: রাতে গরম দুধ খেলে শরীরে একধরনের আরাম আসে, মানসিক চাপ কমে, ফলে মন শান্ত হয়। এটি অনেকের রাত্রিকালীন রিল্যাক্সেশন রুটিনের অংশ।

কিন্তু এই অভ্যাসে কিছু অসুবিধাও রয়েছে:

১. ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স: অনেকের শরীরে ল্যাকটোজ হজমের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম থাকে না, ফলে দুধ খাওয়ার পর গ্যাস, পেট ফাঁপা বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা হতে পারে।

২. ওজন বাড়ার সম্ভাবনা: রাতে যদি ফুল-ফ্যাট দুধ বা দুধে চিনি মিশিয়ে খাওয়া হয়, তবে ক্যালোরি অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে, যা ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে পারে।

৩. ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স: রাতে দুধে চিনি বা হরলিক্স/বুস্ট ইত্যাদি মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়তে পারে। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এটি ঝুঁকিপূর্ণ।

৪. হজমের সমস্যা: রাত্রে দুধ খেলে অনেকের গা গুলানো, অম্বল বা পেট ভার হওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যদি রাতের খাবার ভরপেট খাওয়া হয়।

কারা দুধ খেতে পারেন?

শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা: শরীরের বৃদ্ধি ও হাড় মজবুত করার জন্য রাতে দুধ খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

বয়স্করা: হাড় ক্ষয় ও ঘুমের সমস্যায় দুধ সহায়ক।

যারা ঘুমের সমস্যা ভোগেন: ঘুম বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।

খালি পেটে ঘুমোতে পারেন না এমন মানুষ: হালকা গরম দুধ পেট ভরায় ও স্নিগ্ধতা আনে।

রাতে দুধ খাওয়ার অভ্যাস ভালো না খারাপ, তা নির্ভর করে ব্যক্তির শারীরিক অবস্থার উপর। কারও কাছে এটি পুষ্টিকর ও আরামদায়ক, আবার কারও শরীরে অস্বস্তির কারণ হতে পারে। তাই নিজস্ব শারীরিক চাহিদা বুঝে, চিনি বা ভারী উপাদান না মিশিয়ে, পরিমিতভাবে গরম দুধ পান করাই সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত পথ।

সূত্র: https://tv9bangla.com/lifestyle/know-the-side-effects-and-benefits-of-drinking-milk-after-dinner-1226803.html

সজিব

×