ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২

নারকেল পানি সবার জন্য নয়: যেসব মানুষের জন্য এই  পানীয়টি হতে পারে বিপজ্জনক!

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ৫ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ২২:৩৫, ৫ আগস্ট ২০২৫

নারকেল পানি সবার জন্য নয়: যেসব মানুষের জন্য এই  পানীয়টি হতে পারে বিপজ্জনক!

নারকেল পানি বহুদিন ধরেই সুপারড্রিঙ্ক হিসেবে জনপ্রিয়। কম ক্যালোরি, ইলেক্ট্রোলাইটে সমৃদ্ধ এবং শরীরচর্চার পর হাইড্রেশনের জন্য আদর্শ বলে বিবেচিত হয় এই পানীয়টি। ত্বক সুস্থ রাখা থেকে শুরু করে হজমে সহায়তা নারকেল পানির উপকারিতা নিয়ে নানা প্রচারণা থাকলেও, বাস্তবতা হলো, এই পানীয়টি সবার জন্য উপযোগী নয়।

অনেক ক্ষেত্রে এর প্রাকৃতিক শর্করা, খনিজ উপাদান ও শীতল প্রকৃতি শরীরের সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যাঁদের ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ বা খাবারে অ্যালার্জির মতো নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য নারকেল পানি বিপদ ডেকে আনতে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে নিচে তুলে ধরা হলো এমন ছয়টি গোষ্ঠী, যাঁদের নারকেল পানি এড়িয়ে চলাই ভালো।

ডায়াবেটিস রোগীরা নারকেল পানি পানে সতর্ক হোন
নারকেল পানিতে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, সাধারণত প্রতি ২০০ মিলিলিটারে ৬ থেকে ৭ গ্রাম। যদিও এটি ফলের রস বা কোমল পানীয়র তুলনায় কম, তবু রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিয়মিত বা অতিরিক্ত পরিমাণে নারকেল পানি পান করলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ বাড়তে পারে। এছাড়া বাজারে পাওয়া অনেক বোতলজাত নারকেল পানিতে অতিরিক্ত চিনি যোগ করা থাকে, যা আরও ঝুঁকিপূর্ণ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নারকেল পানি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।

যাঁদের অ্যালার্জির প্রবণতা রয়েছে, তাঁরা থাকুন সতর্ক
নারকেল অ্যালার্জি তুলনামূলকভাবে বিরল হলেও, এটি যাঁদের হয় তাঁদের জন্য তা হতে পারে গুরুতর। নারকেল পানি বা নারকেলজাত পণ্য গ্রহণের পর কারও ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, ফোলা বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট, হজমের জটিলতা এমনকি অ্যানাফাইল্যাক্সিসের মতো প্রাণঘাতী প্রতিক্রিয়াও হতে পারে।

এশিয়া প্যাসিফিক অ্যালার্জি জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারকেল অ্যালার্জিতে আক্রান্ত প্রায় ৯০ শতাংশ শিশুর ত্বকে লক্ষণ প্রকাশ পায়, আর প্রায় ১০ শতাংশের দেহে একাধিক অঙ্গের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া ঘটে।
আরেকটি গবেষণা, যেটি ‘Allergologia et Immunopathologia’ জার্নালে প্রকাশিত, সেখানে শিশুদের মধ্যে নারকেলজাত প্রোটিনের কারণে অ্যানাফাইল্যাক্সিস দেখা গেছে। যাঁরা বাদামজাত অ্যালার্জিতে ভোগেন, তাঁদের নারকেল পানির প্রতি অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, যদিও ক্রস-রিঅ্যাক্টিভিটির সম্ভাবনা কম।


নারকেল পানি নিঃসন্দেহে একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়, তবে সবার শরীরের জন্য নয়। বিশেষ কিছু শারীরিক অবস্থা বা অ্যালার্জির ঝুঁকি থাকলে এই পানীয়টি উপকারের বদলে ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। তাই যাঁদের ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা বা খাদ্য অ্যালার্জি রয়েছে, তাঁদের নারকেল পানি গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। সবসময় মনে রাখতে হবে, যে পানীয় একের জন্য উপকারী, তা অন্যের জন্য হতে পারে হুমকি। স্বাস্থ্য সচেতন সিদ্ধান্তই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/24sf6vry

আফরোজা

×