
বর্তমান ব্যস্ত ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে পিঠে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ভুল ভঙ্গি, কাজের চাপ বা শরীরচর্চার অভাবে অনেকেই প্রতিদিনই এই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তবে জানেন কি, সব ধরনের পিঠের ব্যথা কেবল মাংসপেশীর টান কিংবা অস্বস্তির ফল নয়? কখনো কখনো এই ব্যথা কিডনি থেকে আসা একটি গুরুতর সংকেতও হতে পারে।
পিঠের ব্যথা সাধারণত অস্থি-স্নায়ু বা মাংসপেশীর কারণে হয়ে থাকে, তবে কিডনি সংক্রান্ত ব্যথার ধরন একেবারে আলাদা। এটি কিডনি ইনফেকশন, পাথর বা প্রদাহের মতো জটিল সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই সময়মতো পার্থক্য চেনা জরুরি, যাতে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যায়। নিচে তিনটি লক্ষণ তুলে ধরা হলো, যেগুলোর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনার পিঠের ব্যথা কিডনির সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা।
একপাশে গভীর, চাপা ও স্থায়ী ব্যথা অনুভব হলে সতর্ক হোন
কিডনি-সংক্রান্ত ব্যথা সাধারণত পিঠের নিচের দিকে, পাঁজরের ঠিক নিচে গভীরভাবে অনুভূত হয়। এটি সাধারণত একপাশে হয় এবং ব্যথাটি চাপা ধরনের ও নিরবিচারে স্থায়ী থাকে। এই ব্যথা শরীর নাড়াচাড়ায় কমে না এবং বিশ্রাম, ম্যাসাজ বা স্ট্রেচিং করেও উপশম হয় না। অন্যদিকে, পেশির ব্যথা সাধারণত স্পষ্টভাবে অনুভূত হয়, নড়াচড়ার সঙ্গে পরিবর্তন হয় এবং সাধারণ চিকিৎসায় সেরে ওঠে। কিডনির প্রদাহ, পাথর বা সংক্রমণের কারণে এ ধরনের ব্যথা দেখা দিতে পারে।
পিঠের ব্যথার সঙ্গে জ্বর, বমি বা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থাকলে অবহেলা করবেন না
যদি পিঠের ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়, যেমন ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ, প্রস্রাবে জ্বালা বা দুর্গন্ধযুক্ত ম cloudy প্রস্রাব, তাহলে এটি হতে পারে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI)-এর লক্ষণ, যা কিডনিতে পৌঁছে গেছে। এর সঙ্গে জ্বর, বমি বমি ভাব বা ঠান্ডা লাগার উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এই সমস্যা সময়ের সঙ্গে আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
ব্যথা স্থায়ী এবং বিশ্রামেও আরাম না পেলে সচেতন হোন
সাধারণ পেশির ব্যথা বিশ্রাম, স্ট্রেচিং বা গরম সেঁক দেওয়ায় উপশম হয়। কিন্তু কিডনি থেকে আসা ব্যথা দিনের যেকোনো সময়েই স্থায়ী থাকে এবং শরীরের ভঙ্গি পরিবর্তন বা ওষুধেও কমে না। এমনকি ঘুমের মধ্যেও ব্যথা টিকে থাকলে এবং ব্যথানাশক সত্ত্বেও আরাম না পাওয়া গেলে, সেটি কিডনির সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
পিঠে ব্যথাকে সবসময় সাধারণ মনে করা ভুল। কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ যদি উপস্থিত থাকে, তাহলে সেটি কিডনি সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। সময়মতো পার্থক্য বুঝে নেওয়া এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া কিডনির সুস্থতা ও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখবেন, দেরি করলে ক্ষতি হতে পারে বড়। তাই সতর্ক থাকুন, সুস্থ থাকুন।
সূত্র: https://tinyurl.com/2fx4buc7
আফরোজা