
ছবি: সংগৃহীত
মধ্যরাতে হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙে সাইরেনের শব্দে চমকে উঠলো মধ্য ইসরাইল। ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর বরাতে জানা গেছে, ইয়েমেন থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় দেশটির দিকে। ফলে মধ্য ইসরাইলের একাধিক শহরে বেজে ওঠে সতর্কতা সাইরেন, আতঙ্কে ছুটতে থাকে সাধারণ মানুষ।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) জানায়, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি সফলভাবে শনাক্ত ও আকাশেই প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে মাঝরাতে সাইরেনের শব্দে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় এবং নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে যাওয়ার ঘটনায় জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে।
আইডিএফ আরও জানিয়েছে, এই হামলাকে তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং ভবিষ্যতে এমন আক্রমণ প্রতিহত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিচ্ছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা জোরদারেও নেওয়া হচ্ছে নতুন পদক্ষেপ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চল (লেবানন সীমান্ত), দক্ষিণাঞ্চল (গাজা সীমান্ত) এবং পূর্ব ফ্রন্ট (সিরিয়া)– এই তিনটি মোর্চাতেই সামরিক উত্তেজনা চলমান। সেইসঙ্গে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ এখন চতুর্থ একটি সামরিক ফ্রন্ট খুলে দিয়েছে যা ইসরাইলের জন্য একটি জটিল কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
হুথি সশস্ত্র বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলা ছিল গাজার ওপর চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। তারা আগেই ঘোষণা দিয়েছিল, যতদিন না গাজায় হামলা বন্ধ হচ্ছে, ততদিন ইসরাইলি ভূখণ্ড ও স্বার্থের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তারা লোহিত সাগর ও আরব সাগরে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজের বিরুদ্ধে নৌ অবরোধ আরোপের কথাও জানিয়েছে। গত কয়েক মাসে একাধিকবার তারা ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তুর দিকে। হুথিদের দাবি, “এখন আর মধ্যপ্রাচ্যে কোনও সীমান্ত সুরক্ষিত নয়, এবং ফিলিস্তিনের প্রতি বৈশ্বিক সংহতির অংশ হিসেবেই ইয়েমেন এই ভূমিকা পালন করছে।”
ইয়েমেন সরকারের পক্ষ থেকেও বারবার বলা হচ্ছে যে তারা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনকে নৈতিক ও সামরিক উভয় দিক থেকেই সমর্থন করে। তাদের মতে, ইসরাইলের আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই আক্রমণ ইসরাইলকে চাপে ফেলেছে এবং চারটি দিক থেকেই চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
শেখ ফরিদ