
ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমন এক ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যার ফলে এখন থেকে রাশিয়া সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের দিকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে পারবে। এই ঘোষণা শুধু ওয়াশিংটন নয়, গোটা পশ্চিমা জগতেই চরম উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রী মেদভেদেভের এক হুমকি থেকে। তাঁর হুঁশিয়ারির পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘুম উড়ে যায়। নিজেকে নিরাপদ রাখতে এবং রাশিয়াকে চাপে রাখতে রাশিয়ার নিকটবর্তী অঞ্চলে দুইটি পারমাণবিক অস্ত্রবাহী সাবমেরিন মোতায়নের নির্দেশ দেন ট্রাম্প। তবে সাবমেরিনে পারমাণবিক অস্ত্র বহন করছে কিনা, সে বিষয়ে তিনি কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দেননি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ভেঙে যায় ৩৮ বছরের পুরনো 'আইএনএফ' চুক্তি। ১৯৮৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির প্রধান শর্ত ছিল, উভয় দেশ পরস্পরের দিকে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়ন করবে না।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, সোভিয়েত আমলে যে পরিস্থিতিতে রাশিয়া এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল, বর্তমান প্রেক্ষাপট তা নয়। এখন ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো রাশিয়ার ভৌগোলিক নিরাপত্তা ও অখণ্ডতার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই রাশিয়া এই চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া না জানালেও ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রী পেসকপ সতর্ক করেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র সংক্রান্ত যেকোনো বক্তব্য অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং এটি নিয়ে অপ্রয়োজনীয় আলোচনা উত্তেজনা বাড়াবে।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মেদভেদেভ এর আগে ট্রাম্পকে 'আল্টিমেটাম গেম' খেলার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রতিটি নতুন আল্টিমেটাম যুদ্ধের দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার নামান্তর। মেদভেদেভের মন্তব্যের পাল্টা জবাব হিসেবেই ট্রাম্প রাশিয়ার কাছাকাছি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়নের ঘোষণা দেন।
এই উত্তেজনার মধ্যে, ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েই আলোচনার জন্য শিগগিরই মস্কো সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। আগেও তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন, তবে যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি।
রাশিয়া বলছে, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে ওয়াশিংটনের হুমকি ও নিষেধাজ্ঞার রাজনীতি কোনোভাবেই শান্তির পথ তৈরি করবে না। বরং এই পরিস্থিতি দুই পরাশক্তির মধ্যে সরাসরি সংঘাতের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
শেখ ফরিদ