ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২

মুসলিম বিশ্বকে রীতিমতো ধাক্কা, আরবদের এক হাত নিলো হিজবুল্লাহ

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৩ জুলাই ২০২৫

মুসলিম বিশ্বকে রীতিমতো ধাক্কা, আরবদের এক হাত নিলো হিজবুল্লাহ

ছবি: সংগৃহীত

 গাজার পবিত্র ভূমিতে চলমান ইসরাইলি বর্বরতা এবং মানবিক বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নীরব ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন লেবাননের প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহ প্রধান শেখ নাইম কাসেম।

তিনি বলেন, সিরিয়া ও ইরান ইস্যুতে গলা চড়ালেও গাজার বেলায় নিশ্চুপ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আরব দেশগুলো। পবিত্র ভূখণ্ড নিয়ে দৃশ্যমান কোনো প্রতিবাদই করছে না তারা। আরব শেখরা তো কিছু করছেই না—নীরব দর্শকের মতো গাজায় চলমান বর্বরতা চেয়ে চেয়ে দেখছে গোটা মুসলিম বিশ্ব।

এই নীরবতাকে ধিক্কার জানিয়ে কাসেম বলেছেন, "ইসরাইলের সাথে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। দখলদারদের উপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রয়োজনে তাদের বয়কট করতে হবে মুসলিম বিশ্বকে।"

তিনি বলেন, গাজায় এখন মানবতার কোনো ছিটেফোঁটাও অবশিষ্ট নেই। পবিত্র ভূমির অধিবাসীরা ত্রাণের একটি প্যাকেটের জন্য চেয়ে থাকে, অথচ সেই ত্রাণ কেন্দ্রগুলোও মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী রক্তের উৎসবে মেতে উঠেছে, নেতৃত্ব দিচ্ছেন নেতানিয়াহু নিজে।

এই পরিস্থিতিকে মার্কিন-ইসরাইলি চরম বর্বরতা, গণহত্যা ও ‘ক্ষুধার অস্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করে কাসেম বলেন, "এটি মানবিকতা ও নৈতিকতার সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক নেতারা ও প্রতিষ্ঠানগুলো নীরব থেকে এসব অপরাধে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে।"

তিনি আরও জানান, গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডাসহ ২৫টি দেশ নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে এবং অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু কাসেমের মতে, "এই বিবৃতি আর নিন্দা যথেষ্ট নয়। যুদ্ধবিরতির দাবিকারী দেশগুলোও দায় এড়াতে পারে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ, নিষেধাজ্ঞা এবং বিচ্ছিন্নকরণ ও বিচার শুরু করতে হবে।"

হিজবুল্লাহ প্রধান জোর দিয়ে বলেন, "ইউরোপ ও তাদের মিত্র দেশগুলো কথা বললেও, গাজা ইস্যুতে মূল দায়িত্ব আরব ও মুসলিম দেশ এবং তাদের জনগণের উপর। পবিত্র ভূখণ্ডে শান্তি ফেরাতে তাদেরই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।"

তিনি আহ্বান জানান, দখলদার ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ বন্ধ করতে হবে। নিজেদের দেশে ইসরাইলি দূতাবাস ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ করতে হবে। অন্তত মানবিক সহায়তা এবং জীবন ধারণের উপকরণ দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানো উচিত। কাসেম বলেন, "ঐক্যবদ্ধভাবে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিলে ইসরাইল বাধ্য হবে পিছু হটতে। অন্যথায় এই নীরবতা ইতিহাসে লজ্জার কালো অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে।"

শেষে তিনি আরব শাসকদের সতর্ক করে বলেন, "আজ আপনারা নীরব থাকলেও কাল আমেরিকা ও ইসরাইল আপনাদের স্পর্শ করবে। এই আরব বর্বরতা এবং উদাসীনতাই শেষ পর্যন্ত দখলদার ইসরাইলের পতনের কারণ হবে।"

 

শেখ ফরিদ

আরো পড়ুন  

×