ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

এই ৩টি ভুলেই গ্যাস্ট্রিক বাড়ছে প্রতিদিন! আপনি বুঝতেই পারছেন না!

প্রকাশিত: ১১:১৬, ২৪ জুলাই ২০২৫

এই ৩টি ভুলেই গ্যাস্ট্রিক বাড়ছে প্রতিদিন! আপনি বুঝতেই পারছেন না!

ছবি: সংগৃহীত

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি এখন একটি খুবই সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা কমবেশি প্রায় সবাই ভোগেন। বুক জ্বালাপোড়া, পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ঢেঁকুর ওঠা—এগুলো গ্যাস্ট্রিকের পরিচিত লক্ষণ। জীবনযাত্রার ভুলভ্রান্তির কারণেই এই সমস্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের দৈনন্দিন জীবনের এমন তিনটি সাধারণ ভুল রয়েছে, যা অজান্তেই প্রতিদিন আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলছে। আপনি হয়তো বুঝতেই পারছেন না, কিন্তু এই ভুলগুলো আপনার পরিপাকতন্ত্রের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করছে।

১. খাওয়ার অনিয়ম ও দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা:
অনেকেরই খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া, দুপুরের খাবার অনেক দেরিতে খাওয়া, অথবা দিনের পর দিন দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা গ্যাস্ট্রিকের অন্যতম প্রধান কারণ। যখন আপনি দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকেন, তখন পাকস্থলীতে অ্যাসিড জমতে থাকে। এই অতিরিক্ত অ্যাসিড পাকস্থলীর ভেতরের আবরণে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করে এবং গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। আবার, একবারে অনেক বেশি খাবার খেলেও হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ে।

২. মানসিক চাপ ও উদ্বেগ:
আধুনিক জীবনে মানসিক চাপ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা শুধু আমাদের মনকেই নয়, শরীরের পরিপাকতন্ত্রকেও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে। মানসিক চাপ বাড়লে শরীর 'ফাইট অর ফ্লাইট' মোডে চলে যায়, যা হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়। চাপ ও উদ্বেগের কারণে পাকস্থলীতে অ্যাসিডের উৎপাদন বেড়ে যেতে পারে, যা সরাসরি গ্যাস্ট্রিকের কারণ হয়। অনেকেই জানেন না যে, তাদের অ্যাসিডিটির মূল কারণ শারীরিক নয়, বরং মানসিক।

৩. ঘুমের অনিয়ম ও অপর্যাপ্ত ঘুম:
পর্যাপ্ত ঘুম শুধু শারীরিক শক্তির জন্যই নয়, পরিপাকতন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্যও অপরিহার্য। ঘুমের অনিয়ম বা অপর্যাপ্ত ঘুম শরীরের বায়োলজিক্যাল ঘড়িকে এলোমেলো করে দেয়, যা হজম প্রক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে। রাতের বেলা দেরিতে খাওয়া এবং সঙ্গে সঙ্গে ঘুমানোর অভ্যাসও গ্যাস্ট্রিক বাড়ায়। ঘুমের অভাবে শরীর পর্যাপ্ত বিশ্রাম পায় না, যা অ্যাসিড উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় এবং অ্যাসিডিটির সমস্যাকে আরও তীব্র করে তোলে।

গ্যাস্ট্রিক কমাতে কী করবেন?
খাওয়ার সময়সূচী মেনে চলুন: প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার গ্রহণ করুন। কোনো বেলার খাবার বাদ দেবেন না, বিশেষ করে সকালের নাস্তা।

মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: যোগব্যায়াম, ধ্যান, গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, বা পছন্দের কোনো শখ চর্চার মাধ্যমে মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন।

পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের চেষ্টা করুন। রাতে ঘুমানোর অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে খাবার গ্রহণ করুন।

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: অতিরিক্ত তেল, ঝাল, মসলাযুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড, এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় পরিহার করুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।

এই তিনটি সাধারণ ভুল শুধরে নিলে আপনি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন। আপনার দৈনন্দিন অভ্যাসগুলো একবার যাচাই করে দেখুন, কারণ সুস্থ শরীর সুস্থ জীবন ধারণের প্রথম ধাপ।

ফারুক

×