
ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এই ঘোষণা দেওয়ার পর ইউরোপের পরাশক্তি দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসা ও সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
এক্সে (পূর্বতন টুইটার) প্রকাশিত এক বার্তায় প্রেসিডেন্ট মাখোঁ জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
তিনি আরও লেখেন, “এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো গাজায় যুদ্ধের অবসান ঘটানো এবং সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষা করা। শান্তি সম্ভব। আমাদের এখনই যুদ্ধবিরতি দরকার। সব বন্দির মুক্তি ও গাজার জনগণের জন্য বিপুল মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে।”
এই ঘোষণা সংক্রান্ত একটি চিঠি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে পাঠিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
এটি হতে যাচ্ছে জি-৭ ধনী রাষ্ট্রের জোটভুক্ত প্রথম দেশের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার নজির।
তবে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর এই সিদ্ধান্ত ঘিরে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই উদ্যোগকে “অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত” হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই স্বীকৃতিকে “জঙ্গিবাদকে পুরস্কৃত করার পদক্ষেপ” হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, “এটি ইরানের আরও একটি সহযোগী তৈরির হুমকি তৈরি করছে, যেমনটা গাজা হয়েছে।”
তবে সমর্থনও এসেছে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক মহল থেকে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেস এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “নেতানিয়াহু যা ধ্বংস করতে চান, আমরা তা একত্রে প্রতিহত করব। দুই রাষ্ট্র সমাধানই একমাত্র সমাধান।” উল্লেখ্য, স্পেন ২০২৪ সালে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
এছাড়া সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে “ঐতিহাসিক” বলে অভিহিত করেছে এবং অন্যান্য দেশকেও একই পথে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুফিয়ান কুদা এক বিবৃতিতে জানান, “দুই রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়ন এবং ইসরায়েলের দখলদারিত্ব বন্ধের পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হুসেন আল শেখ ফ্রান্সের এই সিদ্ধান্তকে “আন্তর্জাতিক আইন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি ফ্রান্সের অঙ্গীকার” বলে মন্তব্য করেন।
Jahan