
ছবি: সংগৃহীত
৩০ বছর বয়স পার হওয়ার সাথে সাথে আমাদের জীবনযাত্রায় যেমন পরিবর্তন আসে, তেমনি শরীরের চাহিদাও পাল্টাতে শুরু করে। এই বয়স থেকেই হৃদপিণ্ডের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি, কারণ বেশিরভাগ হৃদরোগের ভিত্তি এই সময়েই তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, ৩০ পেরোলেই যদি কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলা না হয়, তবে ভবিষ্যতে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আপনার হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে এখনই জেনে নিন ৭টি জরুরি নিয়ম:
১. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
৩০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি বছর অন্তত একবার রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করানো উচিত। উচ্চ রক্তচাপ বা উচ্চ কোলেস্টেরল প্রায়শই কোনো লক্ষণ দেখায় না, কিন্তু নীরবে হৃদপিণ্ডের ক্ষতি করে। নিয়মিত পরীক্ষা আপনাকে প্রাথমিক পর্যায়ে সমস্যা শনাক্ত করতে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করবে।
২. সুষম ও হার্ট-বান্ধব খাদ্য গ্রহণ:
আপনার খাদ্যতালিকায় পরিবর্তন আনুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি, স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাট বাদ দিন। এর বদলে তাজা ফল, শাক-সবজি, গোটা শস্য, ডাল, কম চর্বিযুক্ত প্রোটিন (যেমন মাছ, মুরগির বুকের মাংস) এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন বাদাম, অ্যাভোকাডো, অলিভ অয়েল) অন্তর্ভুক্ত করুন। লবণ গ্রহণ সীমিত রাখুন, কারণ অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায়।
৩. নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি গতির ব্যায়াম (যেমন brisk walking, জগিং, সাইক্লিং বা সাঁতার) নিশ্চিত করুন। সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম হৃদপিণ্ডকে শক্তিশালী করে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। একটানা বসে থাকার অভ্যাস পরিহার করে মাঝে মাঝে বিরতি নিয়ে হাঁটাহাঁটি করুন।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম:
প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন ঘুম হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। ঘুমের অভাব রক্তচাপ বাড়াতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ঘুমের সময় হৃদপিণ্ড বিশ্রাম পায় এবং নিজেকে মেরামত করার সুযোগ পায়।
৩০ পেরিয়েছেন মানেই হৃদপিণ্ডের যত্নে আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার সময় এসেছে। এই সহজ কিন্তু কার্যকর নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি আপনার হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে পারবেন এবং দীর্ঘ, স্বাস্থ্যকর জীবন উপভোগ করতে পারবেন। আজ থেকেই শুরু করুন এই পরিবর্তনগুলো!
ফারুক