ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

যে লক্ষণগুলো উপেক্ষা করলে চোখের ক্যান্সার থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ১৭ জুলাই ২০২৫

যে লক্ষণগুলো উপেক্ষা করলে চোখের ক্যান্সার থেকে বেঁচে থাকা প্রায় অসম্ভব

ছবি: সংগৃহীত

চোখের ক্যান্সার হয় যখন চোখের ভেতরে বা চারপাশের কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে দ্রুত বেড়ে একটি টিউমার তৈরি করে। এই টিউমার দুই ধরনের হতে পারে—ভাল বা অসুস্থ। অসুস্থ বা ক্যান্সারযুক্ত টিউমার দ্রুত বড় হতে পারে এবং শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ক্যান্সার সময়মতো ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক কার্যকর হয়, যা দৃষ্টি রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়ক।

নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করানো খুবই জরুরি, কারণ অনেক সময় লক্ষণ দেখা দেয়ার আগেই সমস্যা শনাক্ত করা যায়। চোখের ক্যান্সারের ঝুঁকি ও লক্ষণ সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন, যা চিকিৎসার ফলাফল উন্নত করে।

চোখের ক্যান্সারের লক্ষণ ও উপসর্গ

চোখের ক্যান্সার বিভিন্নভাবে প্রকাশ পেতে পারে। সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়:

  • দৃষ্টিশক্তি সমস্যা: ঝাপসা দেখা, বিকৃত দেখা, পাশের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া বা হঠাৎ দৃষ্টি হারানো

  • চোখের সামনে ফ্লোটার বা ঝলকানি: চোখের সামনে ছোট ছোট দাগ বা রেখার মতো দেখা, অথবা হঠাৎ আলো ঝলকানো

  • চোখের রং বা আকৃতিতে পরিবর্তন: আইরিস (চোখের রঙিন অংশ) বা সাদা অংশে বড় হচ্ছে এমন গাঢ় দাগ, পিউপিলের আকার বা আকৃতিতে পরিবর্তন, চোখ ফুলে যাওয়া

  • চোখে লালচে ভাব বা চুলকানি: দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি বা লাল হওয়া যা কমছে না

  • চোখ বা পলকের নিচে গাট্টা বা ফোলা: পলকে বা চোখের বলের মধ্যে বড় হচ্ছে এমন কোনো গুটি

  • চোখের গতি পরিবর্তন: চোখের বলের অবস্থান পরিবর্তন বা চোখ সঠিকভাবে না ঘোরানো

আগে থেকে শনাক্তকরণ

অধিকাংশ সময় চোখের ক্যান্সার ধরা পড়ে নিয়মিত চোখ পরীক্ষার সময়। যদি চোখ বা দৃষ্টিতে কোনো অস্বাভাবিকতা অনুভব করেন, অবিলম্বে বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে পরীক্ষা করানো উচিত।

চোখের ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণসমূহ

নিচের কিছু কারণ আপনার চোখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে:

  • বয়স: ৫০ বছরের উপরে চোখের ক্যান্সার বেশি হয়, তবে শিশুদের মধ্যে বিশেষ করে ৫ বছরের নিচে ‘রেটিনোব্লাস্টোমা’ নামক ক্যান্সার দেখা যায়।

  • ত্বক ও চোখের রং: হালকা ত্বক এবং নীল বা সবুজ চোখের মানুষের মধ্যে চোখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি, অন্যদিকে গাঢ় ত্বক ও বাদামী চোখের মানুষের ঝুঁকি কম।

  • বংশগত সমস্যা: কিছু জেনেটিক রোগ যেমন ডিসপ্লাস্টিক নেভাস সিনড্রোম বা BAP1 টিউমার প্রিডিসপোজিশন সিনড্রোম ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ায়।

  • সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি: সূর্যের আলো বা ট্যানিং বেডের অতিবেগুনী রশ্মি চোখের ভিতরের মেলানোমা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, যদিও এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।

নিয়মিত চোখ পরীক্ষা ও ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতন থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ, যাতে চোখের ক্যান্সার দ্রুত ধরা পড়ে এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেয়া যায়।

আবির

×