ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

১০ ব্যাংক এবং ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে টেকসই প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক, কোন ব্যাংক পেল স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ১৮:০১, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৮:১২, ১৭ জুলাই ২০২৫

১০ ব্যাংক এবং ২ আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে টেকসই প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক, কোন ব্যাংক পেল স্বীকৃতি

ছবি:সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকাশিত ‘সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স রিপোর্ট ২০২৪’-এ দেশের ১০টি বেসরকারি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে টেকসই আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এই স্বীকৃতি শুধু একটি সম্মাননা নয়, বরং দেশের ব্যাংকিং খাতকে আরও দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব করার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

এবার যে ১০টি ব্যাংক এই স্বীকৃতি পেয়েছে, তারা হলো:
ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।

এর মধ্যে ব্র্যাক, সিটি, ইস্টার্ন, যমুনা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও প্রাইম ব্যাংক আগের বছরও একই স্বীকৃতি পেয়েছিল, যা তাদের ধারাবাহিক টেকসই কার্যক্রমেরই প্রমাণ।

অন্যদিকে, ২০২৩ সালে তালিকাভুক্ত এক্সিম ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCB) এবং উত্তরা ব্যাংক এবার তালিকা থেকে বাদ পড়েছে।

অ-ব্যাংকিং খাতেও প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত রেখেছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স। তারা পরপর দ্বিতীয় বছর টেকসই প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ধরে রেখেছে।

কীভাবে করা হয় এই মূল্যায়ন?
বাংলাদেশ ব্যাংক মোট পাঁচটি সূচকের ওপর ভিত্তি করে এসব প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করে:

সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ইনডেক্স

সিএসআর (কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা) কার্যক্রম

সবুজ প্রকল্পে অর্থায়ন

কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি ইনডেক্স

ব্যাংকিং সেবার বিস্তৃতি

এর মধ্যে ‘কোর ব্যাংকিং সাসটেইনেবিলিটি’ ও ‘ব্যাংকিং সেবার বিস্তৃতি’ মিলিয়ে মোট স্কোরের প্রায় ৬০% নির্ধারণ করে। যারা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় দক্ষ, যথেষ্ট মূলধন সংরক্ষণ করে এবং অপ্রাপ্ত ঋণের হার কম — তারা এগিয়ে থাকে।

মূল্যায়নে আরও বিবেচনা করা হয়:

নিট এনপিএল অনুপাত (অপরিশোধিত ঋণের হার)

ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত

প্রভিশন সংরক্ষণ

ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (CMSME) ঋণ প্রদান

বড় ঋণখাতের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

ব্যাংকিং সেবার বিস্তৃতি নির্ধারণে দেখা হয় শাখা সংখ্যা, গ্রাহক হিসাব, ঋণ ও আমানতের হিসাব এবং এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রসার।

সততা, দায়িত্ব ও টেকসই ভবিষ্যতের পথে এক পদক্ষেপ
২০২০ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এই টেকসই অর্থায়ন রেটিং চালু করে। উদ্দেশ্য একটাই — পরিবেশবান্ধব, সামাজিকভাবে দায়িত্বশীল এবং জবাবদিহিমূলক ব্যাংকিং খাত গড়ে তোলা।

এই মূল্যায়ন কেবল সংখ্যা বা পরিসংখ্যানের খেলা নয়, বরং এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন। যেখানে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফার বাইরেও সমাজ, পরিবেশ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাবছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত আমাদের সকলেরই, কারণ একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে না, টেকসইতা ও নৈতিকতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্যসূত্রঃ https://www.tbsnews.net/economy/10-banks-2-financial-institutes-recognised-bangladesh-bank-sustainability-finance-report

 
 
 

মারিয়া

×