ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ক্যাম্পাস অরক্ষিত রেখে পালালেন গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ১৭ জুলাই ২০২৫

ক্যাম্পাস অরক্ষিত রেখে পালালেন গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভায় ঘিরে গতকাল বুধবার গোপালগঞ্জ জেলাজুড়ে উত্তেজনা ছিল। আশঙ্কার বাইরে ছিল না গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) ক্যাম্পাসও। শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই এনসিপির কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়েছিলেন। তাঁদের কেউ কেউ আটকা পড়েছিলেন, হামলার শিকারও হয়েছেন।

তবে এর মধ্যেই গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোহেল হাসান ক্যাম্পাস ছেড়ে পালান। তাও নিজের গাড়িতে নয়, শিক্ষকদের বাসে খুলনায় চলে যান তিনি।

যদিও নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী, উপ-উপাচার্যকে সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হয়।

উপ-উপাচার্যের এমন কাণ্ডে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয় ক্যাম্পাসজুড়ে। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটি নিয়ে ব্যঙ্গও করছেন।

তবে এ বিষয়ে জানতে অধ্যাপক সোহেল হাসানকে কল দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন।

উপ-উপাচার্যকে শিক্ষকদের বাসে দেখে হতবাক হয়েছিলেন বলে জানান একজন শিক্ষক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে আমরা খুলনার উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস থেকে বাস ছাড়ি। এক পর্যায়ে উপ-উপাচার্য স্যার আমাদের গাড়িতে ওঠেন। প্রথমে ভাবছিলাম তিনি হয়তো আমাদের খোঁজ-খবর নিতে আসছেন। পরে দেখি না, তিনি গাড়িতে করে খুলনায় যাচ্ছেন। তার চোখ-মুখে আতঙ্ক ছিল এবং তিনি বারবার বলছিলেন যে, গোপালগঞ্জের অবস্থা ভালো না, যখন তখন কিছু একটা হয়ে যেতে পারে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন পেজেও ইতোমধ্যে এ নিয়ে সমালোচনা চলছে। জিএসটিউ ট্রল নামের একটা পেজে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‌‘ব্রেকিং নিউজ!! শেখ হাসিনার বিদায়ের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে পলায়ন করলেন গোবিপ্রবির প্রো-ভিসি!! শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিনি গোপালগঞ্জের গ্যাঞ্জামের খবর পেয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লোকাল ট্রান্সপোর্ট বিআরটিসিতে পলায়ন করেছেন!’

জিএসটিউ ইনসাইডার নামের একটা পেজে আরেক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘গোপালগঞ্জের এই কঠিন সময়ে অবস্থা খারাপ দেখে আমাদের অরক্ষিত রেখে মাননীয় প্রো-ভিসি স্যার ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে গেলেন রাজশাহীতে।’

বুধবার সকালে এনসিপি নেতারা গাড়িবহর নিয়ে শহরে ঢোকার আগেই পুলিশের গাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরে ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। দুপুর দেড়টার দিকে নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে গোপালগঞ্জ শহরের পৌরপার্ক এলাকায় এনসিপির সমাবেশ মঞ্চে হামলা চালায়।

এনসিপির সমাবেশে যোগ দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলার স্বীকার হন গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়া শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয়, উপজেলা পরিষদ অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে ছিলেন। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হলে তারা ব্যক্তিগত উদ্যোগ, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।

আসিফ

×