
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
গোপালগঞ্জে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ব্যর্থ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আলোচনার বিষয় নিয়ে এ বিবৃতি দেন মির্জা ফখরুল।
ফখরুল বলেন, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সভায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সভা মনে করে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাত করার জন্য ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটায়। ফলশ্রুতিতে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কার্ফু জারি করতে হয়। যা এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার নীল নকশা বলে মনে করা হয়। সভা এই প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে। সভায়, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ বিস্তারিত অবহিত করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করে যে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে বিঘিœত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকা- বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাবৃন্দ গণমাধ্যমে শুধু কথাই বলছেন কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি সংঘটিত মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকা-ে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বীরউত্তম, বিএনপি চেয়ারপার্সন গণতন্ত্রের আপোসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের তরুণ জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত যে সকল অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান তা গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা এসব কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায়। সভা মনে করে এই ধরনের কর্মকা- শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে ।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি আশা করে সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দ্যরে বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকা- থেকে বিরত থাকবে। আমরা মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
প্যানেল হু