ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাদেশ: ব্লু-গোল্ড বা নীল-সোনার” বিশ্ব অর্থনীতিতে এক উদীয়মান শক্তি

আলহাজ কবীর আহমেদ ভূঁইয়া

প্রকাশিত: ০০:০৪, ১৮ জুলাই ২০২৫

বাংলাদেশ: ব্লু-গোল্ড বা নীল-সোনার” বিশ্ব অর্থনীতিতে এক উদীয়মান শক্তি

ছবি: জনকণ্ঠ

বিশ্বব্যাপী যখন বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, তখন বাংলাদেশ একটি ব্যতিক্রমী ভূ-প্রাকৃতিক বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আছে। বছরে গড়ে ২৩০০ মিমি বৃষ্টিপাত, ৭০০-রও বেশি নদী-নালা, অসংখ্য খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও জলাভূমি—এসব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি অনাবিষ্কৃত সম্ভাবনার জলভাণ্ডার। যেখানে বিশ্বে মাত্র ০.৫% মিঠা পানি সরাসরি মানব ব্যবহারের উপযোগী, সেখানে বাংলাদেশের তুলনামূলক প্রাকৃতিক সুবিধা এক নতুন কৌশলগত সুযোগ সৃষ্টি করেছে।

বিশ্বব্যাপী বিশুদ্ধ পানির সংকট এখন একবিংশ শতাব্দীর অন্যতম মারাত্মক হুমকি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানির সরবরাহ থেকে বঞ্চিত। অন্যদিকে, জাতিসংঘ পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ৪০% জনসংখ্যা পানির চরম সংকটে পড়বে।

বাংলাদেশের এই বিপুল জলসম্পদকে যদি প্রযুক্তি, নীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কাঠামোর সঙ্গে যুক্ত করা যায়, তাহলে বাংলাদেশ রূপ নিতে পারে একটি “বিশ্ব জল রপ্তানি কেন্দ্র”-এ, যা মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং পানিশূন্য এশীয় অঞ্চলগুলোতে উন্নতমানের বিশুদ্ধ পানির সরবরাহকারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।

বাংলাদেশের পানি বিশুদ্ধতার দিক থেকে পৃথিবীর যে কোন দেশের পানি থেকে এগিয়ে আছে। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও সিলেট অঞ্চলের পানিতে pH ও TDS মাত্রা স্বাভাবিকভাবে বোতল জাতকরণের উপযোগী। টাঙ্গুয়ার হাওর ও সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকার পানি ইতোমধ্যেই উচ্চ বিশুদ্ধতার জন্য চিহ্নিত (Islam et al., ২০২১)। এই অঞ্চলের পানির পিএইচ লেভেল    ৬.৫ – ৮.০    WHO সুপারিশকৃত: ৬.৫ – ৮.৫। যা রীতিমতো অবাক হওয়ার মত। এটা বাংলাদেশের জন্য একটা সোনার খনি বলা চলে। এই জন্যই বাংলাদেশের পানিকে ব্লু গোল্ড বলা যায়। 

বর্ষা, নদী ও সম্ভাবনা: বাংলাদেশের বর্ষা শুধুই মৌসুমি ঘটনা নয়; এটি একটি অর্থনৈতিক সুযোগ। জুন-সেপ্টেম্বর মাসে দেশের মোট বৃষ্টিপাতের ৮০%-এর বেশি ঘটে। এই পানির একটি অংশ যদি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষণ ও পরিশোধন করা যায়, তবে তা রপ্তানিযোগ্য বিশুদ্ধ পানিতে পরিণত হতে পারে।

বাংলাদেশের নদ-নদীর মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ১২০০ বিলিয়ন ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়, যা বিশ্বের অনেক বড় নদী ব্যবস্থার চেয়ে বেশি। এসব পানির বিশাল অংশ সামান্য পরিশোধনেই WHO ও ISO মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হতে পারে।

বিশ্বব্যাপী বোতলজাত পানির বাজার বর্তমানে দ্রুতগতিতে সম্প্রসারণ হচ্ছে। ২০২৪ সালের হিসাব অনুযায়ী এই বাজারের আকার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে এই বাজারের পরিধি ৫২৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই বাজারের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার (CAGR) প্রায় ৬.৮ শতাংশ, যা এই খাতকে বৈশ্বিক বিনিয়োগ ও রপ্তানির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বিশ্বের বোতলজাত পানির সবচেয়ে বড় ভোক্তা অঞ্চলগুলোর মধ্যে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশসমূহ যেমন: সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত, যেখানে বিশুদ্ধ, হালাল এবং মিনারেল সমৃদ্ধ পানির চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। এ ছাড়াও চীন ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বিশুদ্ধ বোতলজাত পানির বাজার উল্লেখযোগ্য হারে সম্প্রসারিত হচ্ছে। এসব অঞ্চলে এক লিটার প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের পানির দাম বর্তমানে ১ থেকে ৫ ডলার পর্যন্ত, বিশেষ করে যেসব পানি হিমবাহ থেকে সংগৃহীত, স্নো ফিল্টারড বা হালাল সার্টিফায়েড।

এই বাস্তবতায় বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে গেছে। দেশের প্রচুর প্রাকৃতিক মিঠা পানির উৎস, খরচ-সাশ্রয়ী উৎপাদন ব্যবস্থা এবং দক্ষ জনশক্তি ব্যবহার করে যদি বাংলাদেশ এই বিশাল বাজারের মাত্র ১ শতাংশ অংশও অর্জন করতে সক্ষম হয়, তবে প্রতি বছর ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত রপ্তানি আয় সম্ভব হতে পারে। শুধু তাই নয়, এই খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন, এবং বহুজাতিক প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (FDI) আকর্ষণের দ্বারও উন্মুক্ত হবে।

বাংলাদেশের উচিত এখনই একটি সুসংগঠিত পানির শিল্পভিত্তিক রপ্তানি কৌশল গ্রহণ করা। আধুনিক বোতলজাত পানি উৎপাদনের জন্য আলাদা শিল্প অঞ্চল নির্ধারণ, হালাল ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ব্র্যান্ড তৈরির উদ্যোগ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার বাজারে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রবেশ, এবং 'ওয়াটার এক্সপোর্ট পলিসি' প্রণয়নের মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

বিশ্বের জলবায়ু সংকট ও বিশুদ্ধ পানির ঘাটতির প্রেক্ষাপটে বোতলজাত পানির বাজার যে একটি আগামীদিনের অর্থনৈতিক খনি—তা এখন আর অস্বীকার করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশের ভৌগোলিক সুবিধা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও কৌশলগত পরিকল্পনা যদি একত্রে কাজে লাগানো যায়, তবে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে বিশ্বের 'ওয়াটার ইকোনমি'র অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা সম্ভব। পরিকাঠামো ও প্রযুক্তি ভিত্তিক রূপান্তর পরিকল্পনা
বাংলাদেশের জলসম্পদকে একটি বাণিজ্যিক শক্তিতে পরিণত করতে নিচের পাঁচটি ধাপে রূপকল্প বাস্তবায়ন করা যেতে পারে:

১. বর্ষার পানি সংরক্ষণের জন্য বাঁধ ও জলাধার নির্মাণ পরিবেশবান্ধব জলাধার ও বাঁধ নির্মাণ হাওর-বাঁওড় সংলগ্ন আধুনিক ড্রেনেজ ও ওভারফ্লো খাল গঠন।

২. আন্তর্জাতিক মানের পানি পরিশোধন প্লান্ট স্থাপন। RO ও UV প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরিশোধন। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে শোধনাগার স্থাপন। হাওর অঞ্চলকে “জল শিল্পাঞ্চলে” রূপান্তর।

৩. বোতলজাত পানি রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল। (BWEPZ) ট্যাক্স ছাড়, শুল্ক মুক্ত আমদানি সুবিধাসহ রপ্তানিকেন্দ্রিক শিল্প এলাকা গঠন।

৪. WTO-অনুমোদিত সার্টিফিকেশন ও ট্রেসেবিলিটি ব্যবস্থা জাতীয় পানি মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন।
প্রতিটি রপ্তানি ইউনিটে গুণমানের ডিজিটাল ট্রেসিং ব্যবস্থা।

৫. ব্র্যান্ডিং: “Bangladesh Pure Water” সরকার-সমর্থিত ব্র্যান্ড, যার মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব ও হালাল পানির গ্লোবাল বাজারে প্রবেশ নিশ্চিয়তা।

বিশ্বব্যাপী পানি অর্থনীতির বিকাশে বিভিন্ন দেশ নিজেদের ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য, প্রযুক্তি ও বাজার কৌশলের উপর ভিত্তি করে অনন্য পানিনির্ভর মডেল গড়ে তুলেছে। সিঙ্গাপুর, একটি পানিসম্পদ-স্বল্প দেশ হওয়া সত্ত্বেও, NEWater প্রযুক্তির মাধ্যমে পুনর্ব্যবহৃত পানি ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব এনেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা বর্জ্য জলকে পরিশোধন করে এমন পর্যায়ে নিয়ে যায় যা পুনরায় ব্যবহারযোগ্য ও এমনকি রপ্তানিযোগ্য হয়ে ওঠে। এটি শুধু সিঙ্গাপুরকে পানির দিক থেকে স্বনির্ভরই করেনি, বরং টেকসই নগর উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবেও গড়ে তুলেছে।

অন্যদিকে, সৌদি আরব, মরুপ্রধান একটি দেশ হিসেবে পরিশোধন প্রযুক্তি ও হালাল পানির মানদণ্ড অনুসরণ করে এক বিশেষায়িত পানির বাজার তৈরি করেছে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি পরিশোধন করে তারা ভোক্তা ও ধর্মীয়ভাবে সংবেদনশীল বাজারকে লক্ষ্য করে ‘হালাল পানি’ হিসেবে ব্র্যান্ডিং করছে, যা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে।

চীন পানির খনিজীকরণ ও বিশ্বায়ন কৌশল গ্রহণ করে পানি রপ্তানিকে একটি শক্তিশালী রপ্তানি খাতে রূপান্তর করছে। বিভিন্ন খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ পানি আন্তর্জাতিক বাজারে স্বাস্থ্যসচেতন ভোক্তাদের মাঝে ব্যাপক চাহিদা তৈরি করেছে। চীন এই প্রবণতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের পানিকে 'ফাংশনাল ওয়াটার' হিসেবে রপ্তানির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

ফ্রান্স, তাদের প্রাকৃতিক অ্যালপাইন ঝর্ণাধারা থেকে আহরিত Evian ব্র্যান্ডের মাধ্যমে ‘Natural Spring Water’ এর গুণগত মান ও বিলাসবহুলতা তুলে ধরেছে। এটি কেবল একটি পানির ব্র্যান্ড নয়, বরং একটি ‘লাইফস্টাইল’ প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে—বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত ও প্রিমিয়াম গ্রাহকদের মধ্যে জনপ্রিয়।

অন্যদিকে ভারত, নিজস্ব ব্র্যান্ড যেমন Himalayan ও Bisleri এর মাধ্যমে বাজার সম্প্রসারণ কৌশল নিয়েছে। দেশীয় বাজারে প্রভাব বিস্তার করার পাশাপাশি তারা দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য নিম্ন-মূল্যের সাথে উচ্চমান বজায় রাখার কৌশল নিয়েছে। ভারত পানি শিল্পকে একটি বর্ধনশীল ভোক্তা বাজার হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।

এই উদাহরণগুলো থেকে বোঝা যায়, একটি দেশ ভূপ্রকৃতি বা পানিসম্পদ যাই থাকুক না কেন, সঠিক কৌশল ও প্রযুক্তির মাধ্যমে পানি অর্থনীতিতে বৈশ্বিক নেতৃত্ব দিতে পারে।

বাংলাদেশ তার নিজস্ব প্রাকৃতিক সুবিধার মাধ্যমে এই মডেলগুলো টেকসই ও কম খরচে বাস্তবায়ন করতে পারে।

জল কূটনীতি: পানিকে আঞ্চলিক সহযোগিতার শক্তিতে রূপান্তর গ্লোবাল ব্র্যান্ডিং ও কো-ব্র্যান্ডিং: আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে অংশীদারিত্ব।
রিয়েল টাইম গুণমান পর্যবেক্ষণ: IoT ভিত্তিক সেন্সর ও GIS লিংকযুক্ত সিস্টেম।

বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং অর্থনৈতিক কাঠামো দেশটিকে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত করেছে। এখন সারা পৃথিবীর মধ্যে এটি একটি "পারফেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ডেস্টিনেশন" হিসেবে গড়ে উঠেছে। একদিকে ভারত, চীন ও ASEAN দেশসমূহের বিশাল বাজারের অতি নিকটে অবস্থান, অন্যদিকে কার্যকর সমুদ্রবন্দর ব্যবস্থাপনা—এই দুটি বিষয় বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি কৌশলগত হাবে রূপান্তরিত করছে। চট্টগ্রাম, মোংলা এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর আন্তর্জাতিক রপ্তানি ও আমদানির জন্য আধুনিক অবকাঠামো এবং দ্রুত সংযোগ নিশ্চিত করছে।

বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা হলো এর সাশ্রয়ী শ্রম ব্যয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (BBS) ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশের গড় শ্রমিক ব্যয় মাত্র ১০৫ মার্কিন ডলার প্রতি মাস, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেয় এবং শ্রমনির্ভর শিল্প খাতে বাড়তি সুবিধা প্রদান করে।

এছাড়া, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দুটি আঞ্চলিক বাণিজ্য করিডোর—BCIM-EC (Bangladesh-China-India-Myanmar Economic Corridor) এবং BIMSTEC (Bay of Bengal Initiative for Multi-Sectoral Technical and Economic Cooperation)—এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই করিডোরসমূহ দেশকে বৃহত্তর আঞ্চলিক বাণিজ্য সংযুক্তির সুযোগ দিচ্ছে, যা শুধু দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, বরং পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারেও বাংলাদেশি পণ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহের পথ সুগম করছে।

পানি শুধু প্রাণের উৎস নয়—এটি কূটনীতি, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার মূল চালিকা শক্তি। জলবায়ু পরিবর্তনের এই যুগে বিশুদ্ধ পানির কৌশলগত গুরুত্ব প্রতিদিনই বাড়ছে। বাংলাদেশ তার প্রাকৃতিক জলসম্পদ ও কৌশলগত অবস্থান কাজে লাগিয়ে হয়ে উঠতে পারে বিশুদ্ধ পানির বৈশ্বিক কেন্দ্র। বাংলাদেশের পানি হতে পারে ব্লু-গোল্ড। 

টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি, এবং দূরদর্শী কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিতে পারে সেই “জল অর্থনীতির বৈশ্বিক বিপ্লবে”—যেখান থেকে বয়ে যাবে শান্তি, সমৃদ্ধি ও সম্ভাবনার ধারা।

"ব্লু-গোল্ড বা নীল-সোনার” দিকে যাত্রা শুরু হোক এখানেই। জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বিশ্ব নিরাপত্তা প্রেক্ষাপটে পানি এক নতুন ধরনের সম্পদ ও কূটনৈতিক শক্তি। বাংলাদেশের মতো একটি বিশুদ্ধ পানির সম্ভারে পূর্ণ রাষ্ট্রের জন্য এটি শুধুমাত্র একটি রপ্তানিমুখী খাত নয়—এটি হতে পারে আগামী প্রজন্মের টেকসই অর্থনৈতিক ভিত্তি।

"পানি শুধু জীবন নয়, এটি একটি বৈশ্বিক সম্পদ যার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ হতে পারে বিশ্বনেতা।"

লেখক: আলহাজ কবীর আহমেদ ভূঁইয়া, চেয়ারম্যান, ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন; রাজনৈতিক ও উন্নয়ন কৌশলবিদ।

শহীদ

×