
ছবি: সংগৃহীত
স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলের সমস্যা যখন ঘটে, তখন প্রতিটি মুহূর্ত হয়ে ওঠে জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসকদের মতে, রোগীকে কত দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে, তার উপরই নির্ভর করে জীবন রক্ষা সম্ভব কি না।
এই দ্রুততা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যই তৈরি হয়েছে একটি সহজ স্মারক শব্দ—BE FAST, যার প্রতিটি অক্ষরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এর আগে আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন তৈরি করেছিল ‘FAST’ পদ্ধতি, পরে সেটির সঙ্গে দুটি নতুন অক্ষর যুক্ত করে এটিকে আরও উন্নত করে ‘BE FAST’ করা হয়।
চিকিৎসকদের ব্যাখ্যায়, স্ট্রোক সাধারণত দুই রকমের—ইস্কেমিক স্ট্রোক (রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া) এবং হেমার্যাজিক স্ট্রোক (রক্তনালির ফাটল)। উভয় ক্ষেত্রেই দ্রুত চিকিৎসা না হলে মারাত্মক ফল হতে পারে।
স্ট্রোক চিনে নিতে যে ৬টি লক্ষণ বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, সেগুলো হলো:
🔹 B - Balance (ভারসাম্য): হঠাৎ শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা বা মাথা ঘোরা।
🔹 E - Eyes (চোখ): ঝাপসা দেখা বা এক চোখে অন্ধকার নেমে আসা।
🔹 F - Face (মুখ): মুখের এক দিক ঢলে পড়া বা হাঁসিতে অস্বাভাবিকতা।
🔹 A - Arms (হাত): এক হাত তুলতে না পারা বা দুর্বলতা অনুভব করা।
🔹 S - Speech (কথা): কথা জড়িয়ে যাওয়া, অস্পষ্ট উচ্চারণ, গিলতে সমস্যা।
🔹 T - Time (সময়): উপরের যেকোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই এক মুহূর্তও দেরি না করে হাসপাতালে নিতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু হয়, ততই রোগীর জন্য ভালো। এই সময়টিকেই বলা হয় "গোল্ডেন আওয়ার"। একসময় এই সময়সীমা ধরা হতো ১ ঘণ্টা, তবে বাস্তব পরিস্থিতিতে তা অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ফলে চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্প্রতি তা বাড়িয়ে ৪ ঘণ্টা ৩০ মিনিট করেছে, যাতে অধিকাংশ রোগী উপযুক্ত চিকিৎসা পেতে পারেন।
তবে বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করছেন, সময় যত গড়ায়, ততই জটিলতা বাড়ে। অনেক সময় রোগী বেঁচে গেলেও দেখা দেয় স্থায়ী পক্ষাঘাত বা স্মৃতিভ্রংশের মতো সমস্যা।
📣 তাই সতর্কতা জরুরি—"BE FAST" মেনে সময়মতো পদক্ষেপ নিন। কারণ স্ট্রোকের ক্ষেত্রে এক মিনিটও অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।
সচেতন হোন, জীবন বাঁচান।
Mily