
ছবি: সংগৃহীত।
৪০ পেরোনোর পর ওজন কমানো এবং জেদি পেটের মেদ ঝরানো যতটা কঠিন মনে হয়, সঠিক জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে তা সম্ভব। শীর্ষস্থানীয় ফিটনেস কোচ মেলিসা জানান, প্রতিদিন হাঁটা, প্রোটিন গ্রহণ বাড়ানো এবং ওজন তুলনামূলক ব্যায়াম (strength training) এই বয়সে মেদ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর।
“পেটের মেদ শুধুমাত্র ক্রাঞ্চ বা অ্যাব এক্সারসাইজ দিয়ে কমানো যায় না। এটি সিস্টেমেটিক উপায়ে কমে—টেকসই অভ্যাস, সঠিক পুষ্টি ও স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে,” বলেন মেলিসা। তিনি আরও বলেন, “আপনি মেদ কমাতে পারবেন, আমি নিশ্চিত!”
নিচে ৪০ বছর বয়সের পর ওজন ও পেটের মেদ কমাতে তাঁর অনুমোদিত পাঁচটি কার্যকর টিপস দেওয়া হলো:
১. প্রোটিন বেশি খান:
হরমোনগত পরিবর্তনের সময় প্রোটিন একটি গেম-চেঞ্জার হিসেবে কাজ করে। “৪০-এর পর বেশিরভাগ নারীই যথেষ্ট প্রোটিন পান না,” বলেন মেলিসা। তিনি জানান, আদর্শ শরীরের ওজন অনুযায়ী প্রতিদিন প্রতি পাউন্ডে ০.৭ থেকে ১.০ গ্রাম প্রোটিন খাওয়া উচিত। প্রোটিন মাংসপেশি রক্ষা করে এবং রাতের স্ন্যাক খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
২. ওজন তুলুন ও প্রতিদিন হাঁটুন:
শুধু কার্ডিও করলেই চলবে না—ওজন তোলা বা স্ট্রেন্থ ট্রেনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “প্রতি সপ্তাহে ৩-৪ দিন ওজন তোলার ব্যায়াম হাড়ের স্বাস্থ্য, ইনসুলিন সেনসিটিভিটি এবং পেশি বৃদ্ধিতে সহায়ক,” বলেন মেলিসা। সেইসাথে প্রতিদিন ৮,০০০ থেকে ১০,০০০ পা হাঁটার পরামর্শ দেন তিনি, যা চর্বি কমানো ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
৩. পানি খাওয়া জরুরি:
শরীরে পানির অভাব মেদ ঝরানোর প্রক্রিয়াকে গোপনে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। কোচ মেলিসা জানান, “পানির প্রভাব পড়ে এনার্জি, খিদে ও হজমের ওপর। প্রতিদিন নিজের শরীরের ওজনের অর্ধেক আউন্স পান করা উচিত, আর যদি আপনি বেশি অ্যাক্টিভ হন বা ব্লোটিং-এর প্রবণতা থাকে, তাহলে আরও বেশি পান করতে হবে।”
পানির যথাযথ গ্রহণ ক্ষুধা কমাতে, মেটাবলিজম বাড়াতে এবং ব্যায়ামে সহায়তা করতে কার্যকর।
৪. ঘুম নিয়ে আপস নয়:
“এটি এমন একটি বিষয় যেখানে অধিকাংশ মানুষ ভুল করে বসে,” বলেন মেলিসা। ৪০-এর পর ঘুমের ব্যাঘাত সাধারণ একটি সমস্যা, যা হরমোনের কারণে হতে পারে। কিন্তু ঘুমের অভাবে ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী হরমোন অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এবং শরীরের রিকভারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রতিরাতে ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।
৫. ম্যাক্রো (Macros) জানুন ও হিসাব রাখুন:
সাধারণ ডায়েট চার্ট ৪০-এর পর নারীদের জন্য কার্যকর না-ও হতে পারে। “এই বয়সে শরীরের চাহিদা বদলে যায়। তাই জেনেরিক ডায়েট আর কাজ করে না,” বলেন মেলিসা। তিনি প্রোটিন, কার্ব এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট কতটুকু গ্রহণ করছেন, তা ট্র্যাক করার পরামর্শ দেন।
এই হিসাব রাখা শরীরকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি দিতে সাহায্য করে, পেশি রক্ষা করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, ৪০ বছর বয়সের পর ওজন কমানো একদমই অসম্ভব নয়। তবে এর জন্য দরকার টেকসই অভ্যাস, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং ভালো ঘুম। জিমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটানো নয়, বরং ছোট ছোট পরিবর্তনই এনে দিতে পারে বড় ফলাফল।
সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।
মিরাজ খান