ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

মায়ের শরীরে গুরুতর রোগ, কিন্তু সন্তান থাকবে সুস্থ! জানুন কোন পদ্ধতিতে

প্রকাশিত: ২১:১৯, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:১৯, ১৭ জুলাই ২০২৫

মায়ের শরীরে গুরুতর রোগ, কিন্তু সন্তান থাকবে সুস্থ! জানুন কোন পদ্ধতিতে

ছবি: সংগৃহীত

উত্তরাধিকার সূত্রে সঞ্চারিত জটিল ও জেনেটিক রোগগুলো আগে শুধুমাত্র জন্মের পরই শনাক্ত করা যেত। কিন্তু আধুনিক জিন-সম্পর্কিত প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন জন্মের আগেই এই রোগগুলি চিহ্নিত এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পথে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যাচ্ছে।

ডা. আফরোজা খান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের জেনেটিক্স বিভাগে প্রধান গবেষক, জানান, "বর্তমানে প্রিজেনেটিক স্ক্রিনিং এবং প্রি-ইমপ্লান্টেশন জেনেটিক ডায়াগনসিস (PGD) পদ্ধতির মাধ্যমে গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে মধ্য পর্যায়ে ভ্রূণের মধ্যে জিনগত রোগের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। এর ফলে রোগ নির্ণয় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ পাওয়া যায়।"

সম্প্রতি, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, সান ফ্রান্সিসকোতে (UCSF) পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রি-ইমপ্লান্টেশন জেনেটিক স্ক্রিনিং ব্যবহারে শিকারী জেনেটিক রোগের ঝুঁকি প্রায় ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, হিমোফিলিয়া এবং ডাউন সিনড্রোমের মত রোগগুলো এই পদ্ধতির মাধ্যমে জন্মের আগে শনাক্ত করা সম্ভব।

বাংলাদেশেও এই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ফারহানা বেগম বলেন, “আমাদের দেশে গর্ভাবস্থায় জিনগত রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে যারা জেনেটিক রোগের পরিবারগত ইতিহাস নিয়ে আসেন, তাদের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দশকে এই প্রযুক্তি আরও সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হবে, যা দেশের হাজার হাজার পরিবারকে সম্ভাব্য কষ্ট থেকে রক্ষা করতে পারে।

তবে, ডা. আফরোজা খান সতর্ক করে বলেন, "প্রতিটি পদ্ধতির মতো এরও কিছু সীমাবদ্ধতা ও নৈতিক জটিলতা রয়েছে। তাই পেশাদার চিকিৎসক ও জেনেটিক পরামর্শদাতার পরামর্শ নেওয়া জরুরি।"

রিফাত

×