ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

অ্যালঝাইমার ঠেকাতে বদলান ১১ অভ্যাস

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৫৯, ১৮ জুলাই ২০২৫

অ্যালঝাইমার ঠেকাতে বদলান ১১ অভ্যাস

ছবি: সংগৃহীত

অ্যালঝাইমার রোগ একটি প্রগতিশীল মস্তিষ্কজনিত রোগ, যা ধীরে ধীরে স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কাজ করার সক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। সাধারণত ৬৫ বছর বয়সের পর উপসর্গ দেখা দিলেও, এই রোগ দশকব্যাপী মস্তিষ্কে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ লাখেরও বেশি বয়স্ক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত এবং সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। তবে আশার কথা হলো, জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা সম্ভব।

অ্যালঝাইমার রোগের কারণ:

কোন ঝুঁকিগুলো জানা জরুরি: অ্যালঝাইমারের কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই, বরং এটি জেনেটিক, পরিবেশগত ও জীবনধারাজনিত বেশ কয়েকটি কারণের সমন্বয়ে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। বয়সই সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। ৬৫ বছর বয়সের পর প্রতি ৫ বছর পর পর রোগের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়। পরিবারে কারও অ্যালঝাইমার থাকলে ঝুঁকি বেশি।

APOE ε4 জিন বহনকারী ব্যক্তিরা বেশি ঝুঁকিতে থাকলেও, তা মানেই তারা নিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হবেন—তা নয়।

  • মাথায় আঘাত বা বারবার ধাক্কা খাওয়া ভবিষ্যতে এই রোগের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।
  • হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল সমস্যা মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাধা দিয়ে ক্ষতি করে।
  • দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ ও হতাশা মস্তিষ্কের কাঠামো ও কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে।
  • ধূমপান ও বিষাক্ত পরিবেশে দীর্ঘ সময় থাকা মস্তিষ্কে প্রদাহ বাড়ায়।
  • এসব ঝুঁকির অনেকগুলোই জীবনধারাভিত্তিক এবং প্রতিরোধযোগ্য বা নিয়ন্ত্রণযোগ্য।

অ্যালঝাইমারের লক্ষণ: প্রাথমিকভাবে কী কী দেখে বুঝবেন?

 

  • সাধারণ বয়সজনিত ভুলে যাওয়ার বাইরে অ্যালঝাইমার রোগে স্মৃতি ও আচরণগত পরিবর্তন ঘটে, যা সময়ের সাথে খারাপ হতে থাকে। যেমন:
  • সাম্প্রতিক কথোপকথন বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ভুলে যাওয়া
  • পরিচিত কাজ করতে অসুবিধা
  • পরিকল্পনা বা ধাপে ধাপে কাজ করতে সমস্যা
  • কথাবার্তায় জটিলতা, সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া
  • সময় ও জায়গা নিয়ে বিভ্রান্তি
  • খারাপ সিদ্ধান্ত, ব্যক্তিগত পরিচর্যায় অবহেলা
  • মেজাজ ও আচরণে পরিবর্তন

এসব উপসর্গ অন্য রোগ বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও হতে পারে। তাই, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

অ্যালঝাইমার প্রতিরোধে সহায়ক ১১টি জীবনধারার পরিবর্তন


১. মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাড়ান: নিয়মিত অ্যারোবিক ব্যায়ামে মস্তিষ্কে প্রায় ৪৭% বেশি রক্তপ্রবাহ হয়, যা স্মৃতিশক্তি রক্ষা করে।

২. মানসিকভাবে সক্রিয় থাকুন: নতুন কিছু শেখা ও মানসিক চ্যালেঞ্জ স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়ক।

প্রদাহ কমান: সম্পূর্ণ খাবার, ব্যায়াম, চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং মৌখিক পরিচর্যায় প্রদাহ রোধ সম্ভব।

জিনগত ঝুঁকি থাকলেও অভ্যাসে পরিবর্তন আনুন: স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করলে জেনেটিক ঝুঁকিও হ্রাস পায়।

মাথায় আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করুন: হেলমেট পরা, সিটবেল্ট ব্যবহার ও রিস্কি কাজ এড়িয়ে চলুন।

বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শ এড়ান: ভারী ধাতু, দূষণ, অ্যালকোহল ও কিছু ওষুধ স্মৃতিশক্তির ক্ষতি করতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন: থেরাপি, মেডিটেশন, জার্নাল লেখা মানসিক সুস্থতা রক্ষা করে।

ইমিউন সিস্টেমকে সহায়তা করুন: ভিটামিন ডি, সুষম খাদ্য ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি।

হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখুন: থাইরয়েড, ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরন স্মৃতির উপর প্রভাব ফেলে।

‘ডায়াবিসিটি’ এড়ান: স্থূলতা ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সংমিশ্রণ মস্তিষ্কের ওপর ক্ষতিকর।

গভীর ও পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম মস্তিষ্কের বিষাক্ততা দূর করতে সহায়ক।
 

শহীদ

×