
ভুটানের বিরুদ্ধে বল নিয়ে ছুঁটছেন জোড়া গোল করে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তৃষ্ণা রানী সরকার (জার্সি ৯)। বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির দুই নম্বর গ্
অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফে ছুটছে বাংলাদেশের জয়রথ। ঢাকার বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বৃহস্পতিবার ভুটানকে ফিরতি ম্যাচে ৩-০ গোলে হারিয়ে টানা চার জয় পেয়েছে বাংলার বাঘিনীরা। জোড়া গোল পেয়েছেন শ্রীমতি তৃষ্ণা রানী। প্রথমার্ধের ৩৩ মিনিটে গেঁড়ো খোলা এ উইঙ্গার ৬৬ মিনিটে দলকে ২-০ তে এগিয়ে নেন। ৭৫ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন স্বপ্না রানী। দারুণ এ জয়ে বয়সভিত্তিক সাফে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে শক্ত অবস্থান করে নিল বাংলার বাঘিনীরা।
নিয়মে পরিবর্তন আসায় এবার আর সেমিফাইনাল বা ফাইনাল নেই। চার দলের আসরে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রতিটি দল দুবার করে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে। শীর্ষ দল হবে চ্যাম্পিয়ন। টানা চার ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে নেপালকে টপকে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। চার ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেপাল। এক জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ভুটান। চারে জয় শূন্য শ্রীলঙ্কা। শনিবার নিজেদের পরের ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।
বসুন্ধরার প্র্যাকটিস গ্রাউন্ডে এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে মাঠে নামে। বল দখল, পাসিং ও আক্রমণÑসব দিক থেকেই প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তারা। এই ধারাবাহিক আক্রমণের সুফল আসে ম্যাচের ৩৩তম মিনিটে। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় তৃষ্ণা রানী প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে জোরালো শটে জালের ঠিকানা খুঁজে পান এবং দলকে এগিয়ে দেন ১-০ গোলে। গোলের পরও থেমে থাকেনি বাংলাদেশের আক্রমণ। একের পর এক আক্রমণে ভুটানের ডিফেন্সকে চাপের মুখে ফেলে রাখে স্বাগতিকরা।
প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত মাঠে বাংলাদেশ দলের আধিপত্য ছিল স্পষ্ট। সুসংগঠিত রক্ষণ, মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ এবং ধারাবাহিক আক্রমণ চালিয়ে প্রতিপক্ষকে তটস্থ করে রাখে তারা। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার আরও বাড়ে। তবে অল অ্যাটাক ফুটবল খেলতে গিয়ে ৬২ ও ৬৩ মিনিটে বিপদে পড়তে যাচ্ছিল স্বাগতিকরা। এ সময় একটি পেনাল্টিও মিস করে আফঈদার দল। বাংলাদেশ ‘ডিফেন্ডিং’ চ্যাম্পিয়ন। ২০২৩ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ।
শামসুন্নাহার জুনিয়রদের দারুণ পারফরম্যান্সের সৌজন্যে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা মুকুট পরে তারা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এবার পরিষ্কার ফেভারিট। গতবার ভারত থাকলেও এবার পারিপার্শ্বিক রাজনৈতিক ইস্যুতে বাংলাদেশে দল পাঠায়নি তারা। সুযোগ পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
এদিকে ১৩ জুলাই এই ভুটানের বিপক্ষেই ঠিক নিজেদের আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখা মোসাম্মদ সাগরিকার নিষেধাজ্ঞা এক ম্যাচ থেকে বাড়িয়ে তিন ম্যাচ করেছে সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)। সেদিন ম্যাচের ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডকে ফাউল করার পর তাঁর মাথা ও চুল টেনে ধরেন নেপালের সিমরান। এরপর রেফারি দু’জনকেই লাল কার্ড দেখান। ওই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৩-২ গোলে। দুই ফুটবলারই বৃহস্পতিবার ফিরতি ম্যাচে খেলতে পারেননি।
তবে শুধু এক ম্যাচ নয়, বাংলাদেশের তারকা ফুটবলার সাগরিকাকে তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে সাফ। সাগরিকার মতো তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন সিমরানও। পাশাপাশি দু’জনকেই ৫০০ ডলার করে জরিমানা করা হয়েছে। লাল কার্ড দেখলে সাধারণত এক ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকেন ফুটবলাররা। রেফারি ও ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে অনেক সময় শাস্তির মেয়াদ বাড়ে। তবে মাঠে যা ঘটেছে, তাতে সাগরিকার এত বড় শাস্তি হওয়াতে বিস্মিত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
সাগরিকা ১৯ জুলাই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও খেলতে পারছেন না। ২১ জুলাই নেপালের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা যাবে তাঁকে। অবশ্য চাইলে শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে বাফুফে। কিন্তু আপিল করতে গেলে কয়েকশ’ ডলার জরিমানা দিতে হবে। তাই ফেডারেশন আর সেই পথে হাঁটছে না। আর সাগরিকার জরিমানা পরিশোধ করতে হবে বাফুফেকে। টুর্নামেন্টের স্বাগতিক হিসেবে ফেডারেশনকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
প্যানেল হু