
ছবি: সংগৃহীত
ভাবুন, একটি সাধারণ গাছ যেখানে ৪০ বছরে এক টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করতে পারে, সেখানে একটি যন্ত্র মাত্র একদিনেই সেই পরিমাণ কার্বন শোষণ করছে! শুনতে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির মতো মনে হলেও, এটাই এখন বাস্তব।
যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এমন এক 'কৃত্রিম গাছ' বা ‘সিন্থেটিক ট্রি’, যা প্রকৃত গাছের তুলনায় ১০০০ গুণ দ্রুত বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড শুষে নিতে সক্ষম।
কে আবিষ্কার করলেন?
এই যুগান্তকারী যন্ত্রের মূল কারিগর হলেন অধ্যাপক ক্লাউস লেকনার।
আজ থেকে ২৭ বছর আগে তিনি এই ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
পরে ‘কার্বন কালেক্ট’ নামে একটি স্টার্টআপ এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ গবেষণায় এই প্রযুক্তির বাস্তব রূপ পায়।
কিভাবে কাজ করে এই ‘সিন্থেটিক ট্রি’?
যন্ত্রটির ভেতরে থাকে বিশেষ ধরনের ফিল্টার যা বাতাস থেকে কার্বন ডাইঅক্সাইড আটকে রাখে।
কিছুক্ষণ পর সেই ফিল্টার ধুয়ে ফেললেই কার্বন আলাদা হয়ে যায়।
সেই কার্বন পরে ব্যবহার করা যায়:
শিল্প-কারখানায়
গ্রীনহাউসে
অথবা মাটির নিচে সঞ্চয় করে রাখা যায় ভবিষ্যতের জন্য।
সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো:
এই যন্ত্র চলতে কোনো বিদ্যুৎ বা ফ্যানের প্রয়োজন হয় না। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে বাতাস থেকে কার্বন টেনে নেয়।
কতটা কার্যকর?
প্রতিটি যন্ত্র দিনে ২০ থেকে ৩৬টি গাড়ির সমান কার্বন দূষণ শোষণ করতে পারে।
খরচ ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
এই প্রযুক্তি এখনো কিছুটা ব্যয়বহুল, তবে বিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন:
প্রতি টন কার্বন শোষণে খরচ ৫০–১০০ ডলারের মধ্যে নামিয়ে আনার।
শহরে লাগানো যাবে
এটি শহরের সেই সব জায়গায় বসানো যাবে যেখানে গাছ লাগানো সম্ভব নয়। ফলে শহরের মাঝেও দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে
শুধু শোষণ নয়, বিজ্ঞানীদের মতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এখন—
সেই শোষিত কার্বন কোথায় যাবে?
কীভাবে সংরক্ষণ হবে?
কার্বন ব্যবস্থাপনা ও নিরাপদ সংরক্ষণেও তৈরি হচ্ছে আলাদা পরিকল্পনা।
শেখ ফরিদ