ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

বাসায় শিশুর পড়ার পরিবেশ গড়ে তুলবেন যেভাবে

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:৪৮, ১৮ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৭:৪৯, ১৮ জুলাই ২০২৫

বাসায় শিশুর পড়ার পরিবেশ গড়ে তুলবেন যেভাবে

ছবি: সংগৃহীত

পড়াশোনার সময় মনোযোগ ধরে রাখা শুধু ইচ্ছার বিষয় নয়, এটা একান্ত প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, ফোনের একটি নোটিফিকেশন বা ব্যাকগ্রাউন্ডের শব্দও শিশুর মনোসংযোগ ভেঙে দিতে পারে এবং পূর্ণ মনোযোগে ফিরতে প্রায় ২৫ মিনিট সময় লাগে।

সঠিক পরিবেশ তৈরি না হলে শিশুর শেখার গতি থেমে যেতে পারে। কিন্তু শুধু একটি ডেস্ক আর চেয়ারে বসিয়ে দিলেই হয় না, মনোযোগ ধরে রাখতে প্রয়োজন হয় শিশুর মানসিক আরাম, সংবেদনশীল উপাদান, এবং সুশৃঙ্খল অভ্যাস।

বেশিরভাগ সময় আমরা ধরে নিই, ঘরের এক কোণে ডেস্ক রাখলেই চলবে। কিন্তু ঘরের কোণ অনেক সময় শিশুকে বিচ্ছিন্ন মনে করায়। দেয়াল ফাঁকা থাকলে বা আলো কম হলে পরিবেশ আরও গুমোট লাগে। বরং জানালার পাশে, এমন একটি জায়গায় ডেস্ক রাখা ভালো, যেখানে আলো আসে এবং আশপাশে হালকা সচলতা থাকে। এতে শিশু নিজেকে একা মনে করে না বরং একটি জীবন্ত পরিবেশে পড়তে পারে, ফলে মনোযোগও বাড়ে।

সব শিশু একভাবে নিঃশব্দ পরিবেশে মনোযোগ দিতে পারে না। বরং হালকা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক যেমন ইনস্ট্রুমেন্টাল সুর, ঝর্ণার শব্দ বা পাখির ডাক শিশুর মস্তিষ্ককে শান্ত করে মনোযোগ বাড়াতে পারে। একটি ছোট ইনডোর গাছ, ল্যাভেন্ডার সুগন্ধির ডিফিউজার, বা কোমল কুশনের চেয়ার শিশুর মস্তিষ্কে আরাম তৈরি করে। এই সংবেদনশীল পরিবেশই মনোসংযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।

শিশুকে যদি শুধু বলা হয় “ডেস্ক পরিষ্কার করো”, তারা সেটি নিয়ম হিসেবে নেয় এবং অনীহা বোধ করে। কিন্তু যদি প্রতিটি জিনিসের একটি নাম বা গল্প দেওয়া হয় যেমন পেন্সিল বক্সকে বলা হয় "টুলকিট", ল্যাম্পকে "থিংকিং লাইট" তাহলে এগুলোর সঙ্গে আবেগ জড়ায়। এতে শিশু ওই জিনিসগুলোকে গুরুত্ব দেয় এবং গুছিয়ে রাখার অভ্যাস গড়ে ওঠে। জায়গাটি তখন নিয়মের জায়গা নয়, বরং নিজের জায়গা হয়ে ওঠে। এতে মনোসংযোগও স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে।

আমাদের দেহঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লক আলো ও সময়ের উপর নির্ভরশীল। শিশুর পড়ার সময় যদি প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তাহলে মনোযোগও বাড়ে। সকাল বা সন্ধ্যার সময় হালকা আলোতে ২৫ মিনিটের পড়ার সেশন (যেমন পোমোডোরো টেকনিক) শিশুর পড়া আরও কার্যকর করে তোলে। সন্ধ্যাবেলা হলুদ আলো ও ছোট ছোট বিরতিতে পড়া শিশুকে ক্লান্ত না করে বরং পড়াকে উপভোগ্য করে তোলে।

খেলাধুলা বা স্ক্রিন টাইম থেকে সরাসরি পড়ায় ঢোকা শিশুদের জন্য কঠিন। ফলে মনোযোগও কমে যায়। বরং একটি ছোট রিচ্যুয়াল তৈরি করা যেমন গরম পানি পান করা, বই সাজানো, বা আকাশের দিকে হাত তুলে স্ট্রেচ করা শিশুর মনকে প্রস্তুত করে। এই রিচ্যুয়াল শিশুদের মনোযোগ তৈরির একটি ছন্দ তৈরি করে, যা নিয়ন্ত্রণ নয় বরং অভ্যাসে পরিণত হয়।

মুমু ২

×