
ছবি: সংগৃহীত
লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা বিষাক্ত পদার্থ দূর করা, পুষ্টি সংরক্ষণ, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও বিপাক ক্রিয়ায় মুখ্য ভূমিকা রাখে। লিভারের কার্যকারিতা ঠিক থাকলে শরীর সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকে। এ কারণে লিভার ভালো রাখতে খাবারে কিছু বিশেষ উপাদান রাখা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের ১০টি সুপারফুড লিভারের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়ক।
১. রসুন
রসুনে থাকা অ্যালিসিন ও সালফার যৌগ লিভার এনজাইম সক্রিয় করে এবং বিষাক্ত উপাদান দূর করে।
কীভাবে খাবেন: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১–২ কোয়া কাঁচা রসুন খেতে পারেন, অথবা খাবারে কুচিয়ে শেষে মিশিয়ে খাওয়া ভালো।
২. সবুজ পাতা জাতীয় শাকসবজি
এই শাকসবজিগুলো ক্লোরোফিল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা লিভারকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
কীভাবে খাবেন: সালাদ, স্মুদি বা ভাজি করে নিয়মিত খেতে পারেন।
৩. ক্রুসিফেরাস সবজি (ব্রকোলি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, বাঁধাকপি)
এই সবজিগুলো গ্লুটাথায়ন সমৃদ্ধ, যা লিভারকে ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে।
কীভাবে খাবেন: হালকা ভাজা, ভাপ দেওয়া বা স্মুদিতে আদা ও হলুদ দিয়ে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
৪. অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডোতে থাকা স্বাস্থ্যকর চর্বি ও গ্লুটাথায়ন লিভারকে সুরক্ষা দেয়।
কীভাবে খাবেন: টোস্টে মাখিয়ে, সালাদে বা স্মুদিতে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. বিট
বিটে থাকা বেটাইন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভার থেকে চর্বি দূর করে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমায়।
কীভাবে খাবেন: কাঁচা, রান্না করে অথবা বিটের রস হিসেবেও খাওয়া যায়।
৬. গ্রেপফ্রুট
এই ফলে থাকা নারিঙ্গিন ও নারিঞ্জেনিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমায় এবং লিভারকে রক্ষা করে।
কীভাবে খাবেন: কাঁচা খেতে পারেন, স্মুদি বা সালাদেও ব্যবহার উপযোগী।
৭. চর্বিযুক্ত মাছ (স্যালমন, সার্ডিন, টুনা)
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই মাছগুলো লিভারের প্রদাহ কমিয়ে রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কীভাবে খাবেন: নিয়মিত খাবারের সঙ্গে গ্রিল বা সিদ্ধ করে খাওয়া ভালো।
৮. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে থাকা ক্যাটেকিনস লিভারে চর্বি জমা প্রতিরোধ করে এবং এর কার্যকারিতা বাড়ায়।
কীভাবে খাবেন: প্রতিদিন ১–২ কাপ চিনি ও দুধ ছাড়া গ্রিন টি পান করা উচিত।
৯. বাদাম (বিশেষ করে আখরোট)
আখরোটে থাকা আরগিনিন, ওমেগা-৩ ও গ্লুটাথায়ন লিভার পরিষ্কারে সাহায্য করে।
কীভাবে খাবেন: দিনে ৮–১০টি বাদাম হালকা খাবার বা সালাদের সঙ্গে খাওয়া যেতে পারে।
১০. অলিভ অয়েল
লিভারের প্রদাহ কমাতে সহায়ক এই তেল স্বাস্থ্যকর চর্বির ভালো উৎস।
কীভাবে খাবেন: রান্নায় ব্যবহার করা যায় বা সকালে খালি পেটে এক চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
সতর্কতা: যেকোনো খাবার অতিরিক্ত না খেয়ে পরিমাণমতো ও নিয়মিত খাওয়া জরুরি। যাদের লিভার সমস্যা রয়েছে, তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবার গ্রহণ করবেন।
সুস্থ লিভার মানেই সুস্থ জীবন—তাই সুপারফুড দিয়ে শুরু হোক আজই আপনার সচেতন পথচলা।
সূত্র: https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/health-fitness/health-news/10-superfoods-for-the-liver-and-how-to-eat-them-for-better-benefits/photostory/120930706.cms
আবীর